ফ্লাইট বাতিলের ধাক্কার পর স্বস্তির বার্তা, ‘সবচেয়ে খারাপ সময় পেরিয়ে গেছি’—ইন্ডিগো কর্মীদের চিঠিতে সিইও পিটার এলবার্স

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর: টানা কয়েকদিনের ব্যাপক ফ্লাইট বাতিল ও যাত্রী ভোগান্তির পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানাল ইন্ডিগো। সংস্থার সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের উদ্দেশে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, “সবচেয়ে খারাপ সময় আমাদের পেছনে পড়ে গেছে।” বর্তমানে সংস্থাটি দৈনিক প্রায় ২,২০০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

অপারেশন স্বাভাবিক হওয়ার পর জারি করা ওই চিঠিতে এলবার্স বলেন, এই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে কর্মীদের দলগত কাজ ও অপারেশনাল শৃঙ্খলার জন্য। তিনি লেখেন, “এই সংকটের সময় আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি। পাইলট, কেবিন ক্রু, বিমানবন্দর কর্মী, অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, কাস্টমার সার্ভিস ও সমস্ত সহায়তাকারী বিভাগকে ধন্যবাদ।”

এলবার্স জানান, গত ৯ ডিসেম্বরই কর্মীদের জানানো হয়েছিল যে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এরপরই ধাপে ধাপে ফ্লাইট সূচি পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। আগামী দিনে সংস্থার তাৎক্ষণিক নজর থাকবে তিনটি বিষয়ে—সহনশীলতা (রেজিলিয়েন্স), সমস্যার মূল কারণ বিশ্লেষণ (রুট কজ অ্যানালিসিস) এবং পূর্ণাঙ্গ পুনর্গঠন।

ফ্লাইট বাতিলের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি কোনও একটি ত্রুটির ফল নয়, বরং একাধিক কারণের সম্মিলিত প্রভাব।” কর্মীদের তিনি গুজব বা জল্পনায় না জড়িয়ে শান্ত থাকার এবং নিজেদের দায়িত্বে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

ইন্ডিগোর বোর্ড একটি স্বাধীন বিমান পরিবহণ বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান এলবার্স। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য বড় বিমান সংস্থাতেও এ ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে এবং সেখানকার অভিজ্ঞতা থেকেও শিক্ষা নিয়ে ইন্ডিগো তার ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করবে।

সিইও-সহ শীর্ষ নেতৃত্ব বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন, সমস্যার অভিজ্ঞতা শুনবেন এবং মতামত নেবেন বলেও জানানো হয়েছে। এলবার্স বলেন, তদন্তের রিপোর্ট ও কর্মীদের মতামত মিলিয়েই ভবিষ্যতের জন্য সংস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হবে।

তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর—এই তিন দিনের বিপর্যয় যেন ১৯ বছরে গড়ে ওঠা ইন্ডিগোর পরিচয়কে মুছে না দেয়। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে ইন্ডিগোর প্রায় ৬৫ হাজার কর্মী রয়েছে এবং সংস্থাটি এখনও পর্যন্ত ৮৫০ মিলিয়নের বেশি যাত্রী পরিবহণ করেছে, সম্পূর্ণ নিরাপদ উড়ান রেকর্ড বজায় রেখেই।

উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর থেকে দেশজুড়ে ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিল হয়, যার ফলে তীব্র যাত্রী ভোগান্তি তৈরি হয়। এই ঘটনায় অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন সিইও পিটার এলবার্স ও চিফ অপারেটিং অফিসার ইসিদ্রো পোরকেরাসকে নোটিস পাঠিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে।

এছাড়াও বিষয়টি সংসদীয় নজরদারির মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক বিমান চলাচল বিপর্যয় নিয়ে গঠিত সংসদীয় কমিটির সামনে ইন্ডিগো ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার বক্তব্যকে “এড়িয়ে যাওয়া ও অসন্তোষজনক” বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
______

Leave a Reply