অনলাইন ডেলিভারি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে অপমান ও ভিডিও ভাইরাল; ধর্মনগরে ঝুলন্ত অবস্থায় ডেলিভারি কর্মীর দেহ উদ্ধার

ধর্মনগর, ১৫ ডিসেম্বর: ধর্মনগরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইন ডেলিভারি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে অপমান, মারধর এবং ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এক ডেলিভারি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।

মৃত ডেলিভারি কর্মীর নাম প্রসেনজিত সরকার (আনুমানিক বয়স ২৫)। তিনি নেপাল সরকারের পুত্র এবং ধর্মনগর থানাধীন উত্তর ত্রিপুরা জেলার কামেশ্বর ওয়ার্ড নং–৩ এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে, প্রসেনজিত সরকার ধর্মনগর রাজবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ব্লোডার্ট কুরিয়ার সংস্থায় ডেলিভারি বয় হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ছয়টা নাগাদ ডেলিভারি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ব্লোডার্ট কুরিয়ার অফিসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, দক্ষিণ হুরুয়া এলাকার বাসিন্দা সুস্মিতা ভট্টাচার্য, সঙ্গীতা ভট্টাচার্য (পিতা—হরিপদ ভট্টাচার্য), পিউ ধর, মেঘদিপ ভট্টাচার্য ও সৌরভ ভট্টাচার্য কুরিয়ার অফিসে প্রবেশ করে প্রসেনজিত সরকারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।

পরিস্থিতি দ্রুত গুরুতর আকার নেয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা প্রসেনজিত সরকারকে বেধড়ক মারধর করেন এবং সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেন। ঘটনার পরদিন রবিবার ভোরে এলাকাবাসীরা প্রসেনজিতের বাড়ির পাশের জঙ্গলে একটি গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর নিথর দেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পরিবার ও পুলিশকে জানানো হয়।

পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, যার ফলে প্রসেনজিত গভীর মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন। এই ঘটনায় মৃতের পরিবার শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।

রবিবার প্রসেনজিত সরকারের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্মনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরিবার প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।মামলার নম্বর ২০২৫ডিএমএম১২২, ২০২৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর ওই মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা ভারতীয় দণ্ড সংহিতা-এর ধারা ৩২৯(৪)/ ১১৫ (২)/১০৩(১)/ ৩(৫) ধারা মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।

ঘটনাকে ঘিরে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে অপমান, হুমকি ও ভিডিও ভাইরালের মতো ঘটনার ভয়াবহ প্রভাব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Leave a Reply