পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ পুনঃপরীক্ষা প্রক্রিয়ায় ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম, বেশ কিছু ভুল তথ্য ধরা পড়েছে

কলকাতা, ১৩ ডিসেম্বর : পশ্চিমবঙ্গের বিশেষ পুনঃপরীক্ষা প্রক্রিয়া চলাকালে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম ও ভুল তথ্য সনাক্ত করা হয়েছে। এই অনিয়মগুলো মূলত পিতামাতা বা আত্মীয়দের নামের ভিত্তিতে নতুন ভোটার চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ায় ধরা পড়েছে। যদিও এসআইআর প্রক্রিয়ার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে, তবুও নির্বাচন কমিশন জমা দেওয়া ফর্মগুলোকে পুনঃযাচাই এবং খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করতে চলেছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে “যুক্তিসঙ্গত অমিল” সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ডেটার মাধ্যমে জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ৮৫ লাখ ১ হাজার ৪৮৬ ভোটারের পিতার নাম ভুল বা অমিল রয়েছে, যা মোট ভোটারের ১১.০৯ শতাংশ। ২৪ লাখ ২১ হাজার ১৩৩ ভোটারের ক্ষেত্রে, রেকর্ডে দেখানো হয়েছে যে তাদের ছেলেমেয়ে সংখ্যা ছয়টির বেশি। পিতামাতা এবং সন্তানের বয়সের মধ্যে বড় অমিলও সনাক্ত করা হয়েছে। ১১ লাখ ৯৫ হাজার ২৩০ ক্ষেত্রে পিতামাতার বয়সের পার্থক্য ১৫ বছরের কম, আবার ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩৬ ক্ষেত্রে এই পার্থক্য ৫০ বছরের বেশি—যা বাস্তবসম্মত নয়।

এছাড়া, ৩ লাখ ২৯ হাজার ১৫২ ক্ষেত্রে, ভোটারদের এবং তাদের দাদু-দাদির মধ্যে বয়সের পার্থক্য ৪০ বছরের কম, যা পারিবারিক সম্পর্কের বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। ২০ লাখ ৭৪ হাজার ২৫৬ ভোটারকে “নতুন ভোটার” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও তাদের বয়স ৪৫ বছর বা তার বেশি। লিঙ্গ সংক্রান্ত তথ্যেও বেশ কিছু ভুল সনাক্ত হয়েছে: ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৮ ভোটারের লিঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য ভুল, যার ফলে ভোটারের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।

যদিও এই ভোটার আবেদনগুলো ডিজিটালাইজড করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সূত্র জানিয়েছে, এই ভোটারদেরকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। এই ডেটাবেস এখন রাজ্যের প্রতিটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ব্লক স্তরের কর্মীদের হাতে পৌঁছানো হয়েছে, যাতে যাচাই এবং সংশোধন দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। ক্লেইমস অ্যান্ড অবজেকশন্স পর্বে সাধারণ ভোটাররা তাদের সংশোধনীর সুযোগ পাবেন।

Leave a Reply