জয়পুর, ১২ ডিসেম্বর: সৌদি আরব থেকে রাজস্থানের এক যুবকের মরদেহ ফেরত পাঠাতে দীর্ঘ বিলম্ব হওয়ায় দিল্লিস্থ সৌদি আরবের দূতাবাসকে নোটিশ জারি করেছে রাজস্থান হাইকোর্ট। ১৩ নভেম্বর মৃত্যুর পর ২৮ দিন কেটে গেলেও মরদেহ না আসায় বিধ্বস্ত পরিবারের পক্ষে এটি বড় স্বস্তির পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
জোধপুর বেঞ্চের বিচারপতি নূপুর ভাটি বৃহস্পতিবার সৌদি সরকারের কাছে জবাব চেয়ে এই নোটিশ জারি করেন। মৃত যুবক রমেশ কুমার মেঘওয়াল, রাজস্থানের বালোত্রা জেলার গিদা তহসিলের মেঘওয়ালোঁ কি ধানি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে ১৩ নভেম্বর সৌদি আরবে মারা যান।
মরদেহ পাঠানোতে অস্বাভাবিক বিলম্ব হওয়ায় রমেশের মা তীজু বাইয়ের দায়ের করা পিটিশনের ভিত্তিতে আদালত দ্রুত হস্তক্ষেপ করে। মানবিক বিষয়ে বিদেশি সরকারের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি বিরল হওয়ায় আইন বিশেষজ্ঞরা এটিকে তাৎপর্যপূর্ণ বিচারব্যবস্থাগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ১৭ ডিসেম্বর, যেখানে সৌদি ও ভারত—উভয় সরকার নিজেদের অবস্থান জানাবে।
মরদেহ ফেরত আনতে বিলম্ব হওয়ায় রাজস্থান সিডস কর্পোরেশনের প্রাক্তন পরিচালক এবং বিদেশে ভারতীয়দের সহায়তার জন্য পরিচিত চর্মেশ শর্মা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানান — রাষ্ট্রপতি ভবন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। রাষ্ট্রপতি ভবনের নির্দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিলেও ২৭ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বুধবার তীজু বাইয়ের পক্ষে আইনজীবী সুশীল বিষ্ণোই ও সুনীল পুরোহিত পিটিশন দায়ের করলে আদালত জরুরি ভিত্তিতে পরদিন শুনানির তালিকায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে।
হাইকোর্ট ভারত সরকারের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিস্রি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি (গাল্ফ), এবং রাজস্থান সরকারের হোম সেক্রেটারিসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষদেরও নোটিশ জারি করেছে। ভারত সরকারের পক্ষে এএসজি ভরত ব্যাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে শর্মার অভিযোগের পর ২৬ নভেম্বর সৌদি আরবে ভারতীয় দূতাবাস জানায়, সৌদি পুলিশ এখনো তদন্ত চালাচ্ছে এবং ফরেনসিক মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মরদেহ হস্তান্তর করা যাবে না। ৩ ডিসেম্বর রিয়াদে ভারতীয় দূতাবাস রমেশের মৃত্যুসনদ প্রদান করে, যেখানে মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা উল্লেখ করা হয়। তবে মেডিকেল রিপোর্ট না থাকায় মরদেহ ফেরত পাঠাতে দূতাবাস এখনো অসমর্থ বলে জানায়।

