আগরতলা, ৯ ডিসেম্বর: নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আজ অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় হস্তশিল্প পুরস্কার ২০২৩–২৪ বিতরণী অনুষ্ঠান। এ বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দক্ষ কারুশিল্পীদের মধ্যে থেকে বিশেষ সম্মান অর্জন করেছেন ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার পূর্ব নলছড়ার বাসিন্দা রঞ্জিত দাস। বাঁশের ঝুড়ি তৈরিতে তাঁর অসামান্য দক্ষতা ও ঐতিহ্যবাহী নৈপুণ্যের জন্য রাষ্ট্রপতি মাননীয়া দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর হাতে জাতীয় পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী শ্রী গিরিরাজ সিং, বস্ত্র মন্ত্রকের সচিব শ্রীমতি নীলম শামি রাও, উন্নয়ণ কমিশনার (হস্তশিল্প) শ্রীমতি অমৃত রাজসহ বস্ত্র মন্ত্রকের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
২০২৩–২৪ সালের জাতীয় হস্তশিল্প পুরস্কার বিতরণীর অংশ হিসেবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রঞ্জিত দাস ছাড়াও আরও ১২ জন শিল্পগুরু এবং ৩৬ জন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীকে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিল্পরূপে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়। বস্ত্র মন্ত্রকের বক্তব্য, এই আয়োজন ভারতের বিচিত্র কারুশিল্প ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারে সরকারের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করে।
পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে রঞ্জিত দাস বলেন, “আমি এই শিল্প আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি। সারা জীবন চেষ্টা করেছি বাঁশের কাজকে নিখুঁত করতে। এই সম্মান শুধু আমার নয়—আমার পরিবার, আমার সমাজ এবং সেই তরুণ কারিগরদের, যারা আজও এই শিল্প শিখছে।”
উনার স্ত্রী শ্রীমতি ফুল কুমারী গভীর গর্ব প্রকাশ করে বলেন,
“এই পুরস্কার বহু বছরের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের স্বীকৃতি।”
ত্রিপুরার তৃতীয় প্রজন্মের কারিগর রঞ্জিত দাস সূক্ষ্ম নকশার বাঁশের ঝুড়ি তৈরির জন্য পরিচিত। তিনি ঐতিহ্যবাহী বাঁশশিল্পের সঙ্গে আধুনিক নকশার সমন্বয় ঘটিয়ে নতুনত্ব এনেছেন। একই সঙ্গে তিনি নবীনদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই শিল্পকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।
বস্ত্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতীয় হস্তশিল্প পুরস্কারের উদ্দেশ্য হলো— ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টেকসই জীবিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কারিগরদের অনুপ্রাণিত করা, এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও বেশি পরিচিত করে তোলা।

