আগরতলা, ৮ ডিসেম্বর: অবশেষে সোমবার সকালে রাজ্যে ফিরলো বহি:রাজ্যে পাঠরত ইন্টার্ন চিকিৎসক সপ্তর্ষি দাসের নিথর দেহ। কিছুদিন আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় তিন বন্ধুর সাথে তার মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু বিমানের সমস্যার কারণে এতদিন ধরে দেহ বাড়ি আনা যায়নি। শেষে সড়ক পথে নিথর দেহ আজ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের আমরোহায় বুধবার রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা চার তরুণ ডাক্তারি পড়ুয়ার জীবনে চিরকালীন অন্ধকার নেমে এসেছে। সেই চার জনের একজন ছিল আগরতলার রামনগর ১ নং রোডের একমাত্র সন্তানে ভরসা করা বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান—সপ্তর্ষি দাস। পরিবারের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ, হাসি—সবকিছুই যেন এক মুহূর্তে থেমে গেল একটি ভয়ংকর দুর্ঘটনার ধাক্কায়।
ছয় দিন ধরে নিদ্রাহীন অপেক্ষা, অবিশ্বাস আর ব্যথায় কাতর ছিলেন সপ্তর্ষির বাবা-মা। বিমানপথে মরদেহ আনার জটিলতায় প্রতিদিনই তাদের আশার আলো একটু একটু করে নিভে যাচ্ছিল। অবশেষে ছয় দিনের লম্বা প্রতীক্ষার শেষে কফিনবন্দি অবস্থায় যখন সপ্তর্ষির দেহ রামনগরের বাড়িতে পৌঁছাল, তখন কান্নায় ভেঙে পড়ল পুরো এলাকা। নীরবতার সঙ্গে মিশে গেল হৃদয়বিদারক আর্তনাদ।
একমাত্র সন্তানের চিকিৎসক পড়াশোনা সম্পূর্ণ হওয়ার খুশিতে মাতোয়ারা ছিলেন বাবা মা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। নিজের সন্তানকে শেষবারের মতো ছুঁতেও পারেননি অসহায় বাবা-মা। সমস্ত প্রতিবেশী নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে ছিলেন—কারও চোখেই জল লুকোনো যাচ্ছিল না।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা, বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, মেয়র দীপক মজুমদারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসে জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। মুখ্যমন্ত্রী বললেন— এমন দুঃখের কথা বলার ভাষা নেই। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল সে, ভগবান তাঁদের এই শোক সইবার শক্তি দিন। তাকে রাজ্যে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনার যথাসম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিমান জটিলতার জন্যে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। ঘটনায় গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

