মোদি সরকারের নীতি, অর্থনীতি ও নতুন বিল নিয়ে তীব্র সমালোচনা: ৮ ডিসেম্বর রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের ডাক কংগ্রেসের

আগরতলা, ৫ ডিসেম্বর: কেন্দ্রে মোদি সরকারের অর্থনৈতিক নীতি, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ এবং ‘শ্রম কোড’, ‘বীজ বিল ২০২৫’ ও ‘বিদ্যুৎ বিল ২০২৫’-সহ একাধিক বিলের বিরুদ্ধে বিস্তৃত অভিযোগ ও সমালোচনা করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সরকার ধারাবাহিকভাবে জনস্বার্থ ও গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষার পথে হাঁটছে।

দলের অভিযোগ, ২০১৪ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে “গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ণ করে সরকারপন্থী প্রচার ও বিভাজনমূলক রাজনীতি”কে উৎসাহ দিচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ, কর্পোরেটপন্থী আর্থিক সিদ্ধান্ত এবং শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপের কারণে দেশের বৃহৎ অংশ অর্থনৈতিক চাপে পড়েছে।

কংগ্রেসের দাবি, গত পাঁচ বছরে দেশে ২,০৪,২৩৮টি কোম্পানি বন্ধ হয়েছে, “ভুয়া ও সেল কোম্পানি”র সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে, বহু সংস্থা শ্রমিকদের পাওনা না দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করেছে। এছাড়া শিল্প উত্পাদনে পতন, বিদ্যুৎ খাতে সংকোচন, ভোক্তাক্ষেত্রে মন্দা—এসব তথ্য তুলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে সরকারের “জিডিপি বৃদ্ধির দাবি বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর”।

‘শ্রম কোড’, ‘বীজ বিল’ ও ‘বিদ্যুৎ বিল’ নিয়ে কংগ্রেসের তীব্র আপত্তি প্রকাশ করা হয় এদিন। দলটির অভিযোগ অনুযায়ী, নতুন শ্রম কোড ৯০% শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন করবে, বীজ বিল ২০২৫ কৃষকদের অধিকার “কোম্পানির হাতে তুলে দেবে”—বীজের দাম ও বাজার নিয়ন্ত্রণে কর্পোরেট আধিপত্য সৃষ্টি হবে, বিদ্যুৎ বিল ২০২৫-এ ক্রস-সাবসিডি তুলে দেওয়া হলে “গ্রামীণ পরিবার ও কৃষকদের বিদ্যুৎ খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে”।
কংগ্রেস বলেছে, এসব বিল কার্যকর হলে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও কৃষি কাঠামো কর্পোরেশনের হাতে চলে যাবে এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়বে।

ডিজিটাল নজরদারি সংক্রান্ত ‘সঞ্চার সাথী’ প্রকল্পে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। দলটি বলেছে, জনমতের চাপের মুখে সরকার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করলেও “স্পষ্ট আইনি সংশোধিত নোটিফিকেশন জারি করা প্রয়োজন।”

এই নীতিগুলির প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ৮ ডিসেম্বর রাজ্যব্যাপী আন্দোলন, প্রতিবাদ মিছিল এবং ‘বীজ বিল’ ও ‘বিদ্যুৎ বিল’-এর খসড়া প্রতীকীভাবে পুড়িয়ে দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। দল জানিয়েছে, জনস্বার্থ রক্ষার দাবি নিয়ে আন্দোলনটি সারা দেশজুড়েই পর্যায়ক্রমে চালানো হবে।

Leave a Reply