প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত

নয়াদিল্লি, ২৪ নভেম্বর : নতুন নজির সৃষ্টি করে ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, সোমবার ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বিএর গাভাই তাঁর সরকারি মের্সিডিজ-বেঞ্জ গাড়িটি নিজের উত্তরসূরি বিচারপতি সূর্য কান্তের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে রেখে যান। এই দিনই বিচারপতি সূর্য কান্ত ভারতের ৫৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিচারপতি কান্তকে শপথ গ্রহণ করান, একদিন পরেই, যখন তিনি, ১৬তম রাষ্ট্রপতি রেফারেন্স বেঞ্চের সদস্য হিসেবে, রাষ্ট্রপতি মুর্মু এবং রাজ্যপালদের রাজ্য আইন বিষয়ে কেন্দ্রীয় আদালতের নির্ধারিত সময়সীমা সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি জানিয়েছিলেন যে, রাজ্য আইন বিষয়ে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিত সময়সীমার দ্বারা বাধ্য নন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, আইনমন্ত্রী অরুণ রাম মেঘওয়াল, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, উপ-রাষ্ট্রপতি সিপি রাধাকৃষ্ণন, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বিএর গাভাই, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা হরদীপ সিং পুরি, এইচডি কুমারস্বামী, পীযূষ গয়াল, জেপি নাড্ডা, প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধঙ্কর সহ আরও অনেকে।

জন্ম ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২, হরিয়ানার হিষার জেলার পেটওয়ার গ্রামে। ১৯৮৪ সালে মহর্ষি দয়ানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়, রোহতক থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। তার পরের বছরই হিষার জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন, যেখানে তিনি সাংবিধানিক, সেবা এবং দেওয়ানি বিষয়ক মামলায় বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। ২০০০ সালে তিনি হরিয়ানা রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ অ্যাডভোকেট জেনারেল নিযুক্ত হন এবং ২০০৪ সালে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে মনোনীত হন।

২০১৮ সালে তিনি হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন এবং ২০১৯ সালের ২৪ মে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০২৫ সালের ১৪ মে থেকে তিনি ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ছয় বছরে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্য কান্ত ৩০০টিরও বেশি রায় প্রদান করেছেন। তিনি সংবিধান সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মামলায় অংশগ্রহণ করেছেন, যেমন- আর্টিকেল ৩৭০ বাতিলের পক্ষে রায়, নাগরিকত্ব আইন ৬এ ধারা সংক্রান্ত রায়, এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন প্রদান সংক্রান্ত রায়। সর্বশেষ, তিনি রাজ্য বিলসমূহের ওপর রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের সম্মতির সময়সীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত রেফারেন্সের বেঞ্চেও অংশগ্রহণ করেন।