আগরতলা, ১০ নভেম্বর: শাসক জোট মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও কালো টাকার উপর নির্ভর করে সরকার চালাচ্ছে। বর্তমানে দুর্নীতি রাজ্য সরকার ও ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনোমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল (টিটিএএডিসি)-তেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ আগরতলায় শ্রমিক সমাবেশে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী নেতা ও সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী।
এদিন শ্রী চৌধুরী বলেন, আজকের সমাবেশে শ্রমজীবী মানুষ, যুব সমাজ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতিই অভূতপূর্ব প্রতিরোধের প্রতীক বলে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, কর্মজীবী মানুষকে পরাজিত করা যায় না। আজ আপনারাই তার প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও মেলা আয়োজনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক আস্তাবল ময়দানে রাজনৈতিক সভা আয়োজনে বাধা সৃষ্টি করেছে। তাঁর মতে, বিজেপি, আইপিএফটি এবং তিপরা মথা জোট এখন দিকহীন ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ সাধারণ মানুষের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে।
এদিন শ্রী চৌধুরী সমালোচনা করে বলেন, সরকার হাঁপানিয়া অবকাঠামো উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও, সেই স্থান এখন গণতান্ত্রিক কার্যক্রমের পরিবর্তে বাণিজ্যিক মেলায় ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করেন, আজকের সমাবেশ দান বা অবাস্তব দাবির জন্য নয়। এটি শ্রম, দক্ষতা ও মেধার ন্যায্য মর্যাদার দাবি তোলার আন্দোলন।তিনি আরও অভিযোগ করেন, শাসক জোট মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও কালো টাকা উপর নির্ভর করে সরকার চালাচ্ছে, এবং দুর্নীতি রাজ্য সরকার ও ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনোমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল (টিটিএএডিসি)-তেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যে দুর্নীতি, ভয়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক কণ্ঠকে দমন করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
এদিন তিনি তিপরা মথাকে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, তিপরা মথা রাজ্যকে তিপ্রাল্যান্ড বানাতে চাইছে, কিন্তু তা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। তিপরা মথা ‘নো কম্প্রোমাইজ, ওয়ান লাস্ট ফাইট’-এর পর এখন নতুন স্লোগান দিচ্ছে ‘ওয়ান নর্থ ইস্ট। তাঁর মতে, জনজাতি সম্প্রদায়ের আবেগকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন নির্বাচনে ফায়দা তুলতেই এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মথা।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে চৌধুরী বলেন, যদি সেখানে বিজেপি পরাজিত হয়, তবে তা তাদের জাতীয় স্তরে পতনের সূচনা হতে পারে। তাই জনগণের নিকট তাঁর আহ্বান, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই জোরদার করতে, কারণ রাজ্যে ক্রমবর্ধমান অপরাধ, মাদক সমস্যা ও নৈতিক অবক্ষয় প্রশাসনের ব্যর্থতার চিহ্ন বহন করছে।
এদিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চা-বাগান শ্রমিক, রাবার শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, বেকার যুবক ও দিনমজুররা। চৌধুরী ঘোষণা করেন, কৃষক, জুমচাষি ও শ্রমজীবী মানুষের দাবি নিয়ে তিনি রাজ্যজুড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

