শুধুমাত্র শহর কেন্দ্রীক নয়, রাজ্য সরকার জোর দিয়েছে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবারও দ্রুত মানোন্নয়নের: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ নভেম্বর: রাজোর হেলথ সেক্টরকে অত্যাধুনিক ও রাজাবাসীকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করার মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকার মানুষের আস্থা অর্জন করার লক্ষো কাজ করে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের ক্রমাগত প্রচেষ্টায় রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতিসাধন হয়েছে। আজ আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতালের কেএলএস অডিটোরিয়ামে অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জন অব ইন্ডিয়ার ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের ১৯তম বাৎসরিক কনফারেন্সের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজ্যে এখন জিবি সহ রেফারেল হাসপাতালগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ বছরোগের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হচ্ছে, যা একটা সময় কল্পনাই করা যেতনা। রাজ্যে এখন সাফল্যের সঙ্গে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। লিভার প্রতিস্থাপনের কাজও যাতে এখানে করা যায় তারজন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রাজা সরকার চায় না রাজোর মানুষ অতীতের মতো নিজেদের গাঁটের পয়সা ব্যয় করে কিছু হলেই চিকিৎসার জনা রাজ্যের বাইরে ছুটে যান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক কিছুতেই এখন পরিবর্তন আসছে। রাজোর মানুষকেও নিজেদের রাজোর চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নানা পরিধির বৃদ্ধির মধ্যদিয়ে ত্রিপুরা খুব শীঘ্রই স্বাস্থ্য হাবে পরিণত হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র শহর কেন্দ্রীক নয়, রাজা সরকার জোর দিয়েছে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবারও দ্রুত মানোন্নয়নের। ট্রমা সেন্টার গড়ে তোলা সহ জেলা ও মহকুমা হাসপাতালগুলিকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি হওয়ায় রাজো শিশু মৃত্যুর হার ও গর্ভকালীন অবস্থায় মায়েদের মৃত্যুর হার অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার শুধু আধুনিকীকরণই নয়, স্বাস্থা ক্ষেত্রে নানাভাবে মানুষদের সহায়তা করার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজিএমসিতে টেলিমেডিসিন পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে। টেলিমেডিসিন পরিষেবায় রোগীরা যাতে আরও ভাল সুবিধা পেতে পারেন সেই লক্ষো একটি স্টুডিও নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এজিএমসিতে স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে যুক্ত যেসমস্ত অত্যাধুনিক মেশিন আনা হয়েছে সেগুলি পরিচালনার জন্য পর্যায়ক্রমে রাজ্যের বাইরে প্রশিক্ষণে কর্মীদের পাঠানো হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা পরিষেবার মান বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রাজাকে এইডস ও নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবৈধ নেশা কারবারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কঠোর মনোভাব নিয়েছে। চিকিৎসক হিসেবে নিজের কর্মজীবনের স্মৃতিচারণা করে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন ভাল সার্জন হতে গেলে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে চলা দরকার। কাজের ক্ষেত্রে নিজেদের সবসময় আপডেট রাখার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। চিকিৎকদের বিভিন্ন সংগঠনকে সমাজের জন্যে সেবামূলক নানা কর্মসূচি নিয়ে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার জন্যে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে কর্মজীবনে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে রাজ্যের ২ জন চিকিৎসককে এবং অধ্যায়নে বিশেষ সফলতার জন্যে একজন মেডিকেল পড়ুয়াকে মুখ্যমন্ত্রী সংবর্ধনা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কর্ণাটকের কস্তুরবা মেডিকেল কলেজের প্রফেসর (ডা) শ্রীরাম ভাট। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এএসআইওটিএসসি’র সভাপতি ডা. গীতেশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিতো, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা দেবাশ্রী দেববর্মা, আগরতলা গভর্ণমেন্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপ কুমার সাহা প্রমুখ।