গুয়াহাটি, ৪ নভেম্বর : অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ৩ নভেম্বর পুনরায় ঘোষণা করেছেন যে, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলতে থাকবে। তিনি বলেন, “যতদিন আমি মুখ্যমন্ত্রী আছি, অবৈধ মিয়াদের শান্তি হবে না।”
গুয়াহাটির জামুগুড়িহাটে এক সরকারি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “আজও বিস্বনাথ জেলার বেহালি এলাকায় নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। অবৈধ মিয়াদের শান্তি হবে না যতদিন আমি মুখ্যমন্ত্রী আছি,” বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য আবারও তার সরকারের কঠোর অবস্থানকে সামনে আনে, বিশেষ করে সেসব এলাকায় যেখানে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম—যাদের প্রায়ই ‘মিয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়—জনসংখ্যা বেশি। ‘মিয়া’ শব্দটি ঐতিহ্যগতভাবে বাংলা মুসলিমদের জন্য অপমানসূচক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কিছু সদস্য এটি তাদের পরিচয়ের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা আরও বলেন, “যদি আপনি সমাধিতে বসেও প্রার্থনা করেন, তবুও অবৈধ মিয়াদের শান্তি হবে না। যতদিন আমি মুখ্যমন্ত্রী আছি, তারা উদ্বিগ্ন থাকবে। যদি আমি না থাকি, তখন সেটা আলাদা বিষয়,” বলে তার দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে অসম বিধানসভায় পলিগামি নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল আনা হবে। “যদি কোনো ব্যক্তি পলিগামি করে, তবে তাকে সাত বছর কঠোর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে,” বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২১ সাল থেকে অসম সরকার সরকারী এবং বনভূমির অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে। তবে, বিরোধী দল এবং সমালোচকরা দাবি করছেন যে, এই উচ্ছেদ অভিযানগুলি প্রধানত বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের ক্ষতি করছে।
এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী তার অবস্থানকে পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, উচ্ছেদ অভিযানগুলি তার সরকারের বৃহত্তর লক্ষ্য—সরকারি জমি রক্ষা এবং অবৈধ দখলদারি থেকে “বর্ণিত” ভিত্তি নির্মূল করার অংশ।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত বিশ্বশর্মার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যের বিভিন্ন জেলা—যেমন দারং, নাগাঁও, বরপেটা, হাজোই এবং বিস্বনাথ—এ একাধিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই বিষয়টি রাজ্যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিতর্ক সৃষ্টি করছে এবং প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

