লখনউ হোটেলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টায় ধৃত দিল্লির ছদ্মবেশী যুবক

লখনউ, ৩ নভেম্বর : উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে রাজস্ব কর্মকর্তার ছদ্মবেশ ধারণ করে ঢোকার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত খবর আজ প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্রের খবর, ধৃতের নাম প্রশান্ত মোহন। তিনি দিল্লি-ভিত্তিক একজন ইউপিএসসি কোচ। প্রশান্ত নিজেকে ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস)-এর অফিসার বলে পরিচয় দেন এবং দাবি করেন যে তিনি লখনউ পুলিশ কমিশনারের আত্মীয়।

অভিযোগ, প্রশান্ত মোহন ৩০ অক্টোবর লখনউয়ের ম্যারিয়ট হোটেলে নিজেকে রাজস্ব আধিকারিক পরিচয় দিয়ে রুম বুক করেন। সেই সময় তিনি হোটেল কর্মীদের জানান যে তিনি পুলিশ কমিশনারের আত্মীয়। তার উদ্দেশ্য ছিল ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা.) মানিক সাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। তিনি ওই সময় হোটেলেই অবস্থান করছিলেন।

তবে প্রশান্তের আচরণ ও বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সন্দেহ জাগায়। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় খবর দেন।

পরের দিন যখন পুলিশ হোটেলে পৌঁছায়, প্রশান্ত তখন চেক আউট করে চলে গিয়েছিলেন। তবে দ্রুত অনুসন্ধানের মাধ্যমে পুলিশ তাকে হোটেলের কাছাকাছি এলাকা থেকেই গ্রেফতার করে।

হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রশান্তের গাড়িতে লাল ও নীল বীকন লাইট ছিল, যা তার সরকারি পরিচয়ের দাবি নিয়ে আরও সন্দেহ তৈরি করে। এদিকে তার চালক গাড়িসহ পালিয়ে যায়।

পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর প্রশান্ত নাটকীয়ভাবে বুকে হাত চেপে ‘হার্ট অ্যাটাক’-এর ভান করেন। পরে তাকে তৎক্ষণাৎ লোহিয়া ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকেরা জানান যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এরপর তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রশান্ত স্বীকার করেছেন, তিনি ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে নানা প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ভিআইপিদের সঙ্গে দেখা করতেন এবং তাদের সঙ্গে ছবি তুলে তা পরবর্তীতে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতেন। তিনি জানান, আমি বড় বড় মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পছন্দ করি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রশান্তকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তার অপরাধমূলক অতীত ও নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, এ ধরনের প্রতারণা তিনি অন্যত্রও করেছেন কি না এবং তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না।