তিপ্রাসাদের স্বার্থে কথা বলতে হলে প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের উচিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে রাস্তায় নামা: কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ অক্টোবর:
দুর্নীতি, নেশার বিস্তার, এবং তিপ্রা মথা ও বিজেপির একাংশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করলেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন। শুক্রবার আগরতলার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একের পর এক অভিযোগ তুললেন।

বিধায়ক বলেন, “তিপ্রাসাদের স্বার্থে কথা বলছেন বলে যদি তিপ্রা মথা দাবি করে, তাহলে সরকার ছেড়ে আসছেন না কেন? আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করি।” বিধায়ক এদিন কংগ্রেসের সঙ্গে তিপ্রা মথাকে যুক্ত হয়ে আন্দোলনে নামার আহবান জানান। তাঁর কথায়, জনজাতিদের স্বার্থে কথা বলতে হলে সরকারে বসে কেন আন্দোলন করা হচ্ছে। সরকারের থেকে যদি তাদের কোনো দাবি আদায় না হয় তবে তাদের সরকার থেকে সড়ে আসা প্রয়োজন। সরকারে বসে জনজাতিদের স্বার্থে সরকারের বিপক্ষে কথা বলে তারা জনজাতিদের বিভ্রান্ত করছেন।

এদিকে ৭ নভেম্বর আগরতলায় তিপ্রা মথার কর্মসূচির পেছনে অন্য রহস্য রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, সেই কর্মসূচির পেছনে অন্য রহস্য রয়েছে। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীতেও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনা থাকতে পারে। তাই সরকার যেন এই অনুষ্ঠানের অনুমতি না দেন তার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক। এদিকে প্রদ্যোতের আগরতলার মালিক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি সুদীপ রায় বর্মন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আগরতলার মালিক ত্রিপুরার জনগণ— কেউ ব্যক্তিগতভাবে নয়।”

সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ষষ্ঠ তফসিল শুধু ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও মিজোরামে কার্যকর। তিপ্রাসাদের স্বার্থে কথা বলতে হলে প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের উচিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে রাস্তায় নামা।”

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সুদীপ রায়বর্মন বিজেপি সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব-কেও তীব্র কটাক্ষ করেন। বলেন, “তিনি এমন এক সাংসদ যিনি ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি’ আর ‘সিলেক্ট কমিটি’র পার্থক্যই বোঝেন না।”
বিজেপির একাংশের উদ্দেশ্যে বিধায়কের অভিযোগ, “রাজ্যের কিছু বিজেপি নেতা ৮০-র দশকের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। তারা ভাবে, পেশিশক্তির জোরে সবকিছু দমন করা যাবে।”

রাজ্যে নেশার রমরমা ও এডিসি এলাকায় দুর্নীতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুদীপ। তার দাবি, “পুলিশ যা করছে, তা লোকদেখানো অভিযান ছাড়া কিছুই নয়। প্রকৃতভাবে নেশার ব্যবসার বিরুদ্ধে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।”
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়া কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহাও উপস্থিত ছিলেন।