নয়াদিল্লি, ২৫ অক্টোবর : কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে.পি. নাড্ডা শনিবার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস, নয়াদিল্লির ৫০তম বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও রোগী পরিষেবায় ভারতের গর্ব এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা কেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করেন।
স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে নাড্ডা বলেন, “সহানুভূতির সঙ্গে সেবা করুন, নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখুন এবং পরিবর্তনশীল স্বাস্থ্যচাহিদা মেটাতে উদ্ভাবনকে গ্রহণ করুন।”
মন্ত্রী দেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামোর গত এক দশকের উন্নতির দিকটিও তুলে ধরেন। তিনি জানান, “একসময় দেশে মাত্র একটি এইমস ছিল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। এটি প্রমাণ করে সরকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিষেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।”
নাড্ডা জানান, গত ১১ বছরে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৩৮৭ থেকে বেড়ে ৮১৯ হয়েছে। এমবিবিএস আসন বেড়েছে ৫১ হাজার থেকে ১,২৯ হাজারে, আর পিজি আসন ৩১ হাজার থেকে বেড়ে ৭৮ হাজার হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও ৭৫ হাজার আসন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানান। স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম-এর তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, মাতৃমৃত্যুর হার ১৩০ থেকে নেমে ৮৮ হয়েছে, শিশু মৃত্যুর হার ৩৯ থেকে কমে ২৭ হয়েছে। পাঁচ বছরের নীচে শিশু মৃত্যুর হার এবং নবজাতক মৃত্যুর হার যথাক্রমে ৪২% ও ৩৯% হ্রাস পেয়েছে — যা বৈশ্বিক মানদণ্ডকেও অতিক্রম করেছে।
তিনি আরও জানান, ল্যানসেট পত্রিকার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে টিবি সংক্রমণের হার ১৭.৭% কমেছে — যা বৈশ্বিক গড় ৮.৩%-এর দ্বিগুণেরও বেশি।
স্নাতকদের উদ্দেশে নাড্ডা আহ্বান জানান, “এইমস-এর ঐতিহ্য ও গৌরব রক্ষা করুন, চিকিৎসা ও গবেষণায় অবদান রাখুন এবং সমাজের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করুন।”
অনুষ্ঠানে নীতি আয়োগের সদস্য প্রফেসর ভি.কে. পলও বক্তব্য রাখেন। তিনি স্নাতকদের উদ্দেশে বলেন, “উৎকর্ষ ও উদ্ভাবনকে জীবনের নীতি হিসেবে গ্রহণ করুন, একাডেমিয়ায় যুক্ত হয়ে ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করুন, এবং জ্ঞান, সহমর্মিতা ও নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষার মাধ্যমে ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে অংশ নিন।”
এই সমাবর্তনে মোট ৩২৬ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করেন, যার মধ্যে রয়েছেন ৫০ জন পিএইচডি স্কলার, ৯৫ জন ডিএম/এমসিএইচ বিশেষজ্ঞ, ৬৯ জন এমডি, ১৫ জন এমএস এম, ৪ জন এমডিএস, ৪৫ জন এমএসসি, ৩০ জন এমএসসি এবং ১৮ জন এম. বায়োটেক স্নাতক। এছাড়া, ৭ জন বিশিষ্ট চিকিৎসককে এইমস-এ দীর্ঘ ও অসামান্য অবদানের জন্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
________

