ছট পূজার সূচনা: ‘নহায়-খায়’ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানালেন অমিত শাহ ও রেখা গুপ্তা

নয়াদিল্লি, ২৫ অক্টোবর : ছট পূজার সূচনা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানালেন। ‘নহায়-খায়’ দিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসবকে দুই নেতা ভারতীয় সংস্কৃতি, আস্থা এবং সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অমিত শাহ এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে লিখেছেন, “পরম্পরা, বিশ্বাস ও সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক ‘নহায়-খায়’ উপলক্ষে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। ছটী মাইয়া যেন সবার জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি প্রদান করেন।”

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা নিজের বার্তায় বলেন, “সূর্য উপাসনার মহাপর্ব ছট, যা নহায়-খায় দিয়ে শুরু হয়, তা শুদ্ধতা, নিয়ম এবং আত্মসংযমের প্রতীক। বিহারের লোকসংস্কৃতি এই উৎসবের মাধ্যমে প্রকৃতি ও বিশ্বাসকে একসূত্রে বেঁধেছে। এই পবিত্র দিনে ছটী মাইয়া যেন সকল পরিবারের জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আনেন। সূর্যদেব যেন তাঁর শক্তিতে ভারতকে নতুন আলোর পথে পরিচালিত করেন এবং এই লোকপরম্পরা যেন আমাদের ঐক্য, শৃঙ্খলা ও আত্মনির্ভরতার পথ দেখাতে থাকে।”

ছট পূজা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিন্দু উৎসব, যা মূলত বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে পালিত হয়। পাশাপাশি, নেপালসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ভারতীয় প্রবাসীদের মধ্যেও এই উৎসবের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

সূর্যদেব ও তাঁর বোন ছটী মাইয়ার পূজার প্রতি নিবেদিত এই উৎসব শুদ্ধতা, কৃতজ্ঞতা এবং পারিবারিক মঙ্গল কামনার প্রতীক। ভক্তরা কঠোর নিয়ম মেনে উপবাস ও প্রার্থনার মাধ্যমে সূর্যদেবের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। বিশ্বাস করা হয়, ছট পূজার মাধ্যমে জীবনের অশুভ শক্তি দূর হয় এবং শান্তি ও ইতিবাচকতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

চার দিনব্যাপী এই উৎসবে প্রতিদিনের আচার-অনুষ্ঠানের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে—প্রথম দিন ভক্তরা নদী বা পুকুরে স্নান করে শরীর ও মন শুদ্ধ করেন। এরপর নিরামিষ খাবার তৈরি করে উৎসবের সূচনা হয়। দ্বিতীয় দিন এদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস পালন করা হয়। সন্ধ্যায় গুড়, চাল ও গমের খিচুড়ি প্রস্তুত করে পূজা শেষে প্রসাদ ভাগ করে নেওয়া হয়। তৃতীয় দিন – সূর্যাস্তের সময় ভক্তরা জলাশয়ের ধারে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য প্রদান করেন। ফল, আখ ও প্রসাদ উৎসর্গ করা হয় জীবনের ধারক সূর্যদেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে। চতুর্থ দিন – শেষ দিনে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ভক্তরা তাদের উপবাস ভঙ্গ করেন, যা নবজাগরণ ও আত্মিক পুনর্জন্মের প্রতীক।

ছট পূজা সরলতা, নিষ্ঠা ও পবিত্রতার উৎসব। ফল, শাকসবজি ও মিষ্টির নিবেদন প্রকৃতির দানের প্রতীক, আর উপবাস ও প্রার্থনা মানবমনের শুদ্ধতার বার্তা বহন করে। এই উৎসবের মূল মন্ত্র কৃতজ্ঞতা—প্রকৃতি ও মানবতার মধ্যে ভারসাম্য ও শ্রদ্ধার সম্পর্ককেই ছট পূজা উদযাপন করে।