গাজা শান্তি চুক্তিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা ভারতের

জাতিসংঘ, ২৪ অক্টোবর : গাজা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও উদ্যোগের প্রশংসা করেছে ভারত। জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পি. হরিশ বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক আলোচনায় বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ শান্তির পথে নতুন কূটনৈতিক গতি তৈরি করেছে, এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উচিত তাদের অঙ্গীকারে অবিচল থাকা।

পি. হরিশ বলেন, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চায়—তিনি এই ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

ভারত গত ১৩ অক্টোবর মিশরের শারম এল-শেখে অনুষ্ঠিত গাজা শান্তি সম্মেলনে অংশ নেয় এবং ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাগত জানায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কির্তি বরদন সিংহ।

এই শান্তি চুক্তিটি মূলত ২০ দফার এক পরিকল্পনা, যা ট্রাম্প প্রণয়ন করেছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টা ও চাপের ফলেই ইসরায়েল এবং হামাস উভয় পক্ষ এতে সম্মত হয়।

পি. হরিশ চুক্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতার ভূমিকা নেওয়া মিশর ও কাতারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমরা আশা করি এই ইতিবাচক কূটনৈতিক গতি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করবে।

তিনি আরও বলেন, এখন সময় শান্তি প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার, একে ব্যাহত করার নয়। ভারত একতরফা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেয়।

হরিশ উল্লেখ করেন, স্বল্পমেয়াদী কূটনৈতিক সাফল্যগুলো দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও কার্যকর পদক্ষেপে রূপ নিতে হবে—যার লক্ষ্য হবে দুই-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান, যেখানে ইসরায়েল ও স্বাধীন ফিলিস্তিন শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে।

তিনি পুনরায় নিশ্চিত করেন, ভারত ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অধিকারকে অটলভাবে সমর্থন করে।

তিনি আরও বলেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হতে হবে। এজন্য সামাজিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মতো ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রক্রিয়া প্রয়োজন।

গাজার পুনর্গঠনের বিষয়ে তিনি জানান, ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। হরিশ বলেন, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা অপরিহার্য এবং এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

ভারত ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনকে ১৭০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, যার মধ্যে ৪০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। গত দুই বছরে ভারত ফিলিস্তিনে ১৩৫ মেট্রিক টন ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছে বলেও তিনি জানান।