পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, সীমান্ত পথসমূহ বন্ধ

ইসলামাবাদ, ১২ অক্টোবর : পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় রবিবার পাকিস্তান তাদের প্রধান সীমান্ত পথসমূহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা।

শনিবার রাতে আফগান বাহিনী পাকিস্তানি সীমান্ত চৌকির ওপর গুলি চালায়। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, এটি ছিল পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ। পাকিস্তান জানায়, তারা পাল্টা গোলা ও কামানের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে, এবং এতে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি সীমান্ত চৌকি ধ্বংস হয়েছে।

রবিবার সকাল নাগাদ সংঘর্ষ অনেকটা কমে আসে। তবে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররাম এলাকায় ছেঁড়াছেঁড়া গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

সীমান্ত উত্তেজনার পর রবিবার পাকিস্তান আফগানিস্তানের সঙ্গে দুটি প্রধান সীমান্ত পথ—তোরখাম ও চমন—বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও খারলাচি, আঙ্গুর আড্ডা ও গুলাম খান—এই তিনটি ছোট সীমান্ত পথও বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়।

তবে সীমান্ত বন্ধের ব্যাপারে এখনো কাবুলের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযান শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।

আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ রবিবার বলেন, “আফগানিস্তানের কোনো অংশেই এখন কোনো ধরনের হুমকি নেই।”

প্রসঙ্গত, স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের পাকিস্তানের সঙ্গে ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে আসছে, তালেবান প্রশাসন পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গি সংগঠনগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে, যদিও কাবুল তা অস্বীকার করেছে।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী কাবুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) প্রধানকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। যদিও এ হামলার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি ইসলামাবাদ, এবং টিটিপি নেতার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত নয়।

উল্লেখ্য, টিটিপি দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সরকার উৎখাত করে কড়াকড়ি ইসলামি শাসন কায়েমের চেষ্টা করছে। আফগান তালেবানের সঙ্গে এই গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।