রান্নার গ্যাসের সংকটে নাকাল উত্তর ত্রিপুরা, ঊনকোটি ও ধলাই জেলার মানুষ, প্রশাসনিক উদাসীনতায় ক্ষোভ চরমে

আগরতলা, ৯ অক্টোবর: প্রতি বছরের মতন এবারও পুজোর মরশুমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রান্নার গ্যাসের হাহাকার দেখা দিয়েছে। তবে এবছরের চিত্র ছিল আরও উদ্বেগজনক। উত্তর ত্রিপুরা, ঊনকোটি এবং ধলাই জেলার বহু এলাকা চরম গ্যাস সংকটের কবলে পড়ে। বহু গ্রাহক বুকিং সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে গ্যাস সিলিন্ডার পাননি। ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজার হাজার পরিবারকে।

জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকেই আগরতলা বটলিং প্ল্যান্ট থেকে রান্নার গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। গ্যাস বিতরণকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে বটলিং প্ল্যান্ট থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহ না হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তবে সরবরাহ ঘাটতির পাশাপাশি, গ্যাসের কৃত্রিম সংকট তৈরিতে আরেকটি বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে অবৈধভাবে ঘরোয়া গ্যাসের বাণিজ্যিক ব্যবহার। অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু গ্রাহক প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও একাধিকবার গ্যাস বুকিং করে সেগুলি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিক্রি করে দিচ্ছে। যেখানে আইন অনুযায়ী ১৪.২ কেজি ঘরোয়া এলপিজি সিলিন্ডার শুধুমাত্র বাসস্থানে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে, সেখানে হোটেল, রেস্তোরাঁ সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অবাধে সেই সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে।

আইন অনুযায়ী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র ১৯ কেজির কমার্শিয়াল সিলিন্ডার ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও, প্রশাসনের তরফে কার্যত কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক মাস আগেই জেলার প্রতিটি মহকুমা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বেআইনি গ্যাস ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের। কিন্তু, সেই নির্দেশের বাস্তবায়ন হয়েছে অত্যন্ত সীমিত পর্যায়ে।

ফলে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকাশ্যেই ঘরোয়া গ্যাস ব্যবহার করছে এবং এতে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য সংকট দিনদিন তীব্র হচ্ছে।