ত্রিপুরায় অতীতের অভিজ্ঞতা খুব ভয়াবহ, ক্রমাগত সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আমাদের শবও ফিরতে পারে : কুনাল ঘোষ

আগরতলা, ৮ অক্টোবর : ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের অতীতের অভিজ্ঞতা খুব ভয়াবহ। পূর্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা হয়েছিল। এমনকি নেতা-কর্মীদের আটকও করা হয়েছিল। আজ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল রাজ্য সফরে যাচ্ছি। গতকাল থেকেই সামাজিক মাধ্যমে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের শবও ফিরতে পারে। কারণ, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা আজ এক সন্ত্রাসের নাট্যমঞ্চে পরিণত হয়েছে। আজ ত্রিপুরার উদ্দ্যেশে রওনা দেওয়ার পূর্বে বিমানবন্দরে সাংবাদিক সম্মেলনে করে হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃনমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তৃনমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা আজ এক সন্ত্রাসের নাট্যমঞ্চে পরিণত হয়েছে। যেখানে জঙ্গলরাজ-ই এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর রাজনৈতিক হিংসা পরিণত হয়েছে শাসনের হাতিয়ারে। তাঁর কথায়, গতকাল আগরতলায় যা ঘটেছে, তা বিজেপি নামক দলটার রাজনৈতিক অবক্ষয়ের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বিজেপির কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়, আর রাজ্য পুলিশ নির্বিকার দর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকে। বিরোধী স্বর দমন ও গণতন্ত্রকে মুছে ফেলার জন্য এক সুনির্দিষ্ট আতঙ্কের অভিযানের অংশ ছিল এটি।তাই আজ আমাদের পাঁচজনের প্রতিনিধি দল ত্রিপুরা সফরের উদ্দ্যেশে রওয়ানা দিচ্ছে। প্রতিনিধি দলে আছেন সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, সাংসদ সায়নী ঘোষ, সাংসদ সুস্মিতা দেব, বিধায়ক বিরবাহা হাঁসদা এবং তৃনমুলের যুব নেতা সুদীপ রাহা।

তাঁর কথায়, বিজেপির কারও কারও দাবি, নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের জের ধরেই তৃণমূলের দফতরে হামলা হয়েছে। তবে কুণাল স্পষ্ট জানিয়েছেন, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে কারও ওপর কোনও রকম শারীরিক আক্রমণকে তাঁরা সমর্থন করেন না। ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সদস্যের যোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তিনি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তবে ত্রিপুরায় আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। অতীতে সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা হয়েছে, নেতা-কর্মীদপর আটক করা হয়েছে। সে রাত্রে কোনও ক্রমে প্রাণ বেঁচেছি। গতকাল থেকে সমাজমাধ্যমে আবার সেই হুমকি শুরু হয়েছে। এবার আমাদের মৃতদেহও ফিরতে পারে।

একই সুরে সায়নী বলেন, ত্রিপুরা সফরের একটাই উদ্দেশ্য দলীয় কর্মীদের বার্তা দেওয়া যে তাঁরা ওখানে একা নন। দল তাঁদের পাশে রয়েছে। আর সব কিছুতে বিজেপি তৃণমূলকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জ্ঞান দেয়। ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা কোথায়?, প্রশ্ন তুলেন তিনি। পুলিশের সামনে কাল অফিস ভাঙচুর করা হল। অতীতে আমাদের বার বার দলের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েও যে পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে হয়েছে, তাতে বরং ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।

তাঁর কথায়, তৃণমূল কংগ্রেস গড়ে উঠেছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।এমনকি, গণতন্ত্র যখনই বিপন্ন হয়েছে, তৃনমূল সেই লড়াই অব্যাহত রেখেছে। রাজ্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস যতই বাড়ুক না কেন, তৃনমুলের সংকল্পের আগুন নিভিয়ে দেওয়া যাবে না।

এদিকে, প্রশাসনের তরফ থেকে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এমনকি, বিমানবন্দর থেকে দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত তৃণমূল নেতাদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।