তিনসুকিয়ায় আদিবাসী ও চা-বাগান শ্রমিকদের মহা বিক্ষোভ, এসটি মর্যাদা ও জমির অধিকারের দাবিতে উত্তাল জনসমুদ্র

তিনসুকিয়া, ৮ অক্টোবর: অসমের তিনসুকিয়া শহর মঙ্গলবার পরিণত হয়েছিল আদিবাসী ও চা-বাগান শ্রমিকদের বিক্ষোভের কেন্দ্রে। হুকান পুখুরি ময়দানে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে বহুদিনের বঞ্চনা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। তাদের মূল দাবি—নির্ধারিত জনজাতি (এসটি) মর্যাদা, জমির পাট্টা প্রদান এবং শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি।

বিক্ষোভের সময়ই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক অনুষ্ঠানে ১৪,০০০-রও বেশি মহিলা উদ্যোক্তাকে বীজ তহবিল বিতরণ করছিলেন। ঠিক সেই সময়েই তিন দিক থেকে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে এসে শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হন। স্লোগান, ব্যানার ও পোস্টারে ভরে ওঠে সমগ্র এলাকা—দশকের পর দশক ধরে অবহেলিত আদিবাসী সমাজের ক্ষোভ যেন একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়।

বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সমাজকল্যাণের অভাব নিয়ে অভিযোগ। বহু প্ল্যাকার্ডে দেখা যায়, “জমি আমাদের অধিকার”, “চা-বাগান শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি চাই”—এর মতো স্লোগান।

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিক্ষোভকারীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “এই প্রতিবাদ সঠিক পথে হচ্ছে, কারণ তাদের দাবি যথার্থ ও সমাজকল্যাণমূলক। আমাদের দলের নেতারাও এতে অংশ নেবেন—বিজেপি তাদের দাবির পাশে আছে।”

তিনি আরও বলেন, সরকার আলোচনার মাধ্যমে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে জানান, “অসমে প্রতিটি প্রাপ্য গোষ্ঠীকে তাদের ন্যায্য অধিকার ও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।”

তিনসুকিয়ার এই বিশাল সমাবেশ সাম্প্রতিক সময়ে আদিবাসী ও চা-বাগান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলির একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি রাজ্যের দীর্ঘদিনের সামাজিক ন্যায় ও কল্যাণমূলক সংস্কারের ধীরগতির প্রতি মানুষের অসন্তোষকে নতুনভাবে সামনে এনেছে।