দোহা, ৭ অক্টোবর: কাতারে দ্বিপাক্ষিক সফরে গিয়ে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল ভারত–কাতার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ৬ ও ৭ অক্টোবরের এই সফরে তিনি কাতার সরকারের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
সফরের শুরুতেই দোহায় ভারতীয় দূতাবাসে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মন্ত্রী। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “এক পেড মা কে নাম” উদ্যোগে অংশ নিয়ে একটি চারাগাছ রোপণ করেন তিনি।
পীযূষ গোয়েল ও কাতারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন থানি আল থানি যৌথভাবে ভারত–কাতার যৌথ কমিশনের বৈঠক পরিচালনা করেন। বৈঠকে কৃষি, স্বাস্থ্য, ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি, ফার্মাসিউটিক্যালস, রত্ন ও গয়না, আইটি, সৌরশক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত নিয়ে আলোচনা হয়। বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও, উভয় পক্ষই এটিকে দ্বিগুণ করার অমিত সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী গোয়েল জানান, “বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ভারতের স্থিতিশীল অর্থনীতি ও বিকাশমান স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এক অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে।”
বৈঠকে ভারত–কাতার সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি -এর দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এছাড়াও কাতারের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি (৭.৫ মিলিয়ন টন প্রতি বছর, ২০২৮ থেকে কার্যকর) উদযাপন করা হয় এবং কাতারে ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়।
মন্ত্রী গোয়েল ভারত–কাতার যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদের বৈঠকেও অংশ নেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন এফআইসিআই, সিআইআই, অ্যাসোচ্যাম ও কাতার চেম্বারের শীর্ষ প্রতিনিধিরা। এখানে তিনি ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং প্রথম সরাসরি মুখোমুখি যৌথ বৈঠককে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেন।
সফরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দোহা’র লুলু মল-এ ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস চালু করেন তিনি। এর ফলে কাতারে ভারতীয় প্রবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ডিজিটাল লেনদেন আরও সহজে করতে পারবেন।
ভারতীয় প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে শ্রী গোয়েল ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি, বিশ্বের দ্রুততম বিকাশমান অর্থনীতি হিসেবে ভারতের অবস্থান, এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে “বিকশিত ভারত” গড়ার লক্ষ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “প্রবাসী ভারতীয়রা দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করছেন এবং দেশের উন্নয়নযাত্রার অংশীদার হিসেবেই তাঁদের দেখা হয়।”

