নয়াদিল্লি, ১ অক্টোবর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি (CCEA) বুধবার আসামে জাতীয় সড়ক-৭১৫ (এনএইচ-৭১৫)-এর কলিয়াবর-নুমালীগড় অংশকে চার লেনে উন্নীত ও প্রশস্ত করার অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পে মোট ৬,৯৫৭ কোটি টাকার মূলধনী ব্যয় হবে এবং এটি ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রোকিউরমেন্ট ও কনস্ট্রাকশন (EPC) পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ৮৫.৬৭৫ কিলোমিটার এবং বিশেষভাবে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান (KNP) অঞ্চলের জন্য বন্যপ্রাণীবান্ধব ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বর্তমানে এই দুই লেনের সড়ক নগাঁও জেলার জাখলাবন্ধা ও গোলাঘাট জেলার বোকাখাটের মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহর অতিক্রম করে এবং কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর চলে। এই পথে ভারী যানবাহনের চাপ ও মৌসুমি বন্যার কারণে বন্যপ্রাণী প্রায়ই সড়ক পেরিয়ে কার্বি আংলং পাহাড়ে চলে যায়, যার ফলে বহুবার প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঝুঁকি কমাতে প্রকল্পের আওতায় ৩৪.৫ কিমি দীর্ঘ উঁচু করিডর, ৩০.২২ কিমি সড়ক প্রশস্তকরণ এবং ২১ কিমি দীর্ঘ নতুন বাইপাস (জাখলাবন্ধা ও বোকাখাট শহরের চারপাশে) তৈরি করা হবে। এর ফলে শুধু যানজটই কমবে না, বন্যপ্রাণীর চলাচলও নিরাপদ হবে এবং গুয়াহাটি, কাজিরাঙা ও নুমালীগড়ের মধ্যে নির্বিঘ্ন যোগাযোগ নিশ্চিত হবে।
উন্নত এই সড়কটি এনএইচ-১২৭, এনএইচ-১২৯ এবং এসএইচ-৩৫-এর সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে যুক্ত হবে এবং তিনটি বিমানবন্দর (তেজপুর, লীলাবাড়ি ও জোরহাট) এবং তিনটি রেলস্টেশন (নগাঁও, জাখলাবন্ধা ও বিশ্বনাথ চাৰিআলি)-তে পৌঁছনো সহজতর হবে। পাশাপাশি এটি তেজপুর ও নগাঁওর ফিশিং ক্লাস্টার, কার্বি আংলং ও ভোখার সামাজিক কেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও পর্যটনস্থল যেমন কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান, কাকোজাঙ জলপ্রপাত, বাবা থান মন্দির ও মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দিরের সঙ্গে যাতায়াত আরও স্বচ্ছন্দ করে তুলবে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৫.৪২ লক্ষ ব্যক্তি-দিন প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান এবং ১৯.১৯ লক্ষ ব্যক্তি-দিন পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সম্পূর্ণ হলে এই সড়ক আসামে বাণিজ্য, পর্যটন ও শিল্পোন্নয়নে নতুন গতি দেবে এবং একইসঙ্গে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলবে। কলিয়াবর-নুমালীগড় অংশকে আধুনিক রূপে উন্নয়ন করা আসামের আঞ্চলিক সংযোগ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য এক পরিবর্তনকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

