চলতি অর্থবছরে এক-তৃতীয়াংশ কমবে রাজ্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার ঘাটতি, ক্রিসিল রিপোর্টে পূর্বাভাস

নয়াদিল্লি, ২৯ সেপ্টেম্বর : রাজ্যের বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলির (ডিসকম) আর্থিক ঘাটতি চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬) প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে ৮,০০০-১০,০০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে অনুমান করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল ১২,০০০-১৫,০০০ কোটি টাকা। সোমবার প্রকাশিত ক্রিসিল রেটিংস-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি, কয়েকটি বড় রাজ্যে ট্যারিফ বৃদ্ধির অনুমোদন এবং গড় বিদ্যুৎ ক্রয় ব্যয় (এপিপিসি) সামান্য কমার ফলে ঘাটতি হ্রাস পেয়েছে। ক্রিসিল জানিয়েছে, অপারেশনাল ঘাটতি কমায় ডিসকমগুলির ঋণ বৃদ্ধির গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে এবং তাদের ঋণ কাঠামোতে সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের ভর্তুকির উপর নির্ভরতা এখনও বহাল এবং উচ্চ ঋণভার মোকাবিলায় আরও বেশি রাজস্ব আয় প্রয়োজন হবে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাণিজ্যিক ও শিল্প ব্যবহারকারীদের (C&I) মধ্যে নবীকরণযোগ্য শক্তি ওপেন অ্যাক্সেসে কেনার প্রবণতা বাড়ায় ডিসকমগুলি নতুন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ক্রিসিল রেটিংস-এর ডেপুটি চিফ রেটিং অফিসার মণীশ গুপ্তা জানান, এই অর্থবছরে অপারেশনাল গ্যাপ কমে ৫-১০ পয়সায় নেমে আসতে পারে, যা গত অর্থবছরে ছিল ১২ পয়সা এবং ২০১৯-২০ সালে ৬০ পয়সা।

গত অর্থবছরে মোট টেকনিক্যাল ও বাণিজ্যিক ক্ষতি (AT&C Loss) ১৯% থেকে নেমে ১৫%-এ এসেছে। ক্রিসিলের বক্তব্য, চলতি অর্থবছরে এই উন্নতির পেছনে ১১টি রাজ্যের মধ্যে চারটিতে ট্যারিফ বৃদ্ধি অনুমোদন, জিএসটি যুক্তিকরণের ফলে কয়লার ক্ষতিপূরণ সেস অপসারণ এবং এর ফলে এপিপিসি-তে প্রতি ইউনিটে ৪-৬ পয়সা হ্রাস কাজ করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত পাঁচ অর্থবছরে ডিসকমগুলির ঘাটতি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। এর পেছনে রয়েছে কন্ডাক্টর ও ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন, ফিডার পৃথকীকরণ, ভূগর্ভস্থ কেবল বসানো ইত্যাদি অবকাঠামোগত বিনিয়োগ। পাশাপাশি, উচ্চ ভর্তুকি প্রাপ্তি ও কয়েকটি রাজ্যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ক্রয়মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থার কারণে গড় রাজস্ব আদায় (ARR) প্রতি ইউনিটে ১১০ পয়সা বেড়েছে।

ক্রিসিল রেটিংস-এর ডিরেক্টর গৌতম শাহি জানান, “৩০টি রাজ্য ডিসকমের মোট ঋণ গত অর্থবছরের ৬.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বাড়লেও এই অর্থবছরে তা ৬.৭-৬.৮ লক্ষ কোটি টাকা হবে। তবে তাদের ইন্টারেস্ট কভারেজ রেশিও গত অর্থবছরের ১.২ গুণ থেকে বাড়িয়ে ১.৩ গুণে পৌঁছবে।”