নয়াদিল্লি, ২৬ সেপ্টেম্বর : বেকারত্বকে দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী শুক্রবার স্টাফ সিলেকশন পরীক্ষায় বারবার কথিত প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি একটি নতুন স্লোগান চালু করেছেন— পেপার চোর, গদি চোর।
বেকার যুবকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাহুল গান্ধী সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে হওয়া প্রশ্নফাঁসের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, “আজ বিজেপির অন্য নাম হল ‘পেপার চোর’ (প্রশ্নপত্র চোর)! দেশ জুড়ে বারবার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা লক্ষ লক্ষ পরিশ্রমী যুবকের জীবন ও স্বপ্নকে নষ্ট করে দিয়েছে।”
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ করে গান্ধী বলেন, “উত্তরাখণ্ডের প্রশ্নফাঁস তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। লক্ষ লক্ষ যুবক দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেছে, কিন্তু বিজেপি তাদের সমস্ত কঠোর পরিশ্রম চুরি করে নষ্ট করে দিয়েছে।”
প্রশ্নফাঁস রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতার নিন্দা করে রায়বরেলির কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “আমরা ক্রমাগত দাবি করে আসছি যে প্রশ্নফাঁস রোধে একটি দৃঢ় ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা স্থাপন করা হোক। কিন্তু মোদী সরকার এই বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছে – কারণ তারা যুবকদের বেকারত্ব নিয়ে চিন্তিত নয়, বরং তাদের নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত।”
রাহুল গান্ধী সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্ব মোকাবিলায় ব্যর্থতারও অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “আজ বেকারত্ব দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা, এবং এটি সরাসরি ভোট চুরির সঙ্গে যুক্ত। ‘পেপার চোর’রা জানে যে যুবকরা চাকরি না পেলেও, নির্বাচনে ভোট চুরি করে তারা ক্ষমতায় থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, যুবকরা এখন রাস্তায় নেমেছে, তারা স্লোগান দিচ্ছে, **“পেপার চোর, গদি ছাড়!”** (প্রশ্নপত্র চোর, সিংহাসন ছাড়!)।
প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে এই লড়াইকে গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করে রাহুল গান্ধী বলেন, “এটি শুধু যুবকদের চাকরির জন্য লড়াই নয়; এটি ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই। ন্যায়বিচারের জন্য এই লড়াইয়ে আমি প্রতিটি ছাত্র ও যুবকের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছি।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাহুল গান্ধীর প্রচারিত এই স্লোগানটি তাঁর আগের স্লোগান **‘ভোট চোর, গদি ছাড়’**-এর সর্বশেষ সংস্করণ, যা তিনি রাজনৈতিক জনসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে সঙ্গে নিয়ে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ব্যবহার করতেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে গান্ধী দাবি করেছিলেন যে গত ৪৫ বছরে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এটিই যুব সমাজের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি লিখেছিলেন, “যখন কোনো সরকার জনগণের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে, তখন তার প্রথম কর্তব্য হল যুবকদের কর্মসংস্থান ও সুযোগ দেওয়া। কিন্তু বিজেপি সৎভাবে নির্বাচনে জেতে না – তারা ভোট চুরি করে এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্দী করে ক্ষমতায় থাকে। সেই কারণেই বেকারত্ব ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।”

