চণ্ডীগড়, ২৪ সেপ্টেম্বর: পাঞ্জাবের রেল যোগাযোগে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটেছে। মঙ্গলবার ভারতীয় রেল ৪৪৩ কোটি টাকার একটি নতুন রেললাইন প্রকল্প অনুমোদন করেছে, যা রাজপুরা থেকে মোহালি পর্যন্ত ১৮ কিমি দীর্ঘ হবে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং রাষ্ট্রমন্ত্রী রবনীত সিং বিট্টু এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন।
নতুন এই রেললাইন মালওয়া অঞ্চলের সঙ্গে চণ্ডীগড়কে সরাসরি সংযুক্ত করবে, যার ফলে যাত্রার দূরত্ব প্রায় ৬৬ কিমি কমে যাবে এবং বর্তমান রাজপুরা–আম্বালা রুটের ওপর চাপ অনেকটাই হ্রাস পাবে। কৃষিজমির উপর কম প্রভাব ফেলতে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে।
এই প্রকল্প রাজ্যের শিল্পক্ষেত্র, বিশেষত টেক্সটাইল, উৎপাদন ও কৃষিতে নতুন গতি আনবে। কৃষিপণ্য দ্রুত পরিবহন সম্ভব হবে, খরচ কমবে এবং ফতেহগড় সাহিব গুরুদ্বারা ও সাংঘোল জাদুঘরের মতো তীর্থ ও পর্যটনস্থলে যাতায়াত আরও সহজ হবে।
এছাড়া, একটি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ফিরোজপুর ক্যান্ট, বাথিন্দা, পাটিয়ালা হয়ে দিল্লি পর্যন্ত ছয়দিন চলবে। ৪৮৬ কিমি পথ অতিক্রম করতে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, পাঞ্জাবে রেল বিনিয়োগের পরিমাণ ২০০৯–১৪ সালের বছরে গড়ে ২২৫ কোটি থেকে ২০২৫–২৬ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ৫,৪২১ কোটিতে পৌঁছেছে, যা প্রায় ২৪ গুণ বেশি। ২০১৪ সালের পর থেকে রাজ্যে ৩৮২ কিমি নতুন ট্র্যাক, ১,৬৩৪ কিমি বিদ্যুতায়ন, ৪০৯টি রেল ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস এবং ৩০টি ‘অমৃত স্টেশন’ নির্মাণ হয়েছে ১,১২২ কোটির ব্যয়ে।
বর্তমানে ৭১৪ কিমি জুড়ে ৯টি নতুন রেলপথ নির্মাণ চলছে, যার মোট মূল্য ২১,৯২৬ কোটি। ৮৮টি নতুন ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাসের কাজও চলছে, যার মূল্য ১,২৩৮ কোটি। ফিরোজপুর–পট্টি লাইনের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী জেলা গুলি বড়ো শহর এবং গুজরাটের বন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত হবে, যার ফলে একটি নতুন অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি হবে এবং পরিবহন খরচ হ্রাস পাবে।
চট ও দীপাবলির আগে ভারতীয় রেল এক রেকর্ড সংখ্যক ১২,০০০টি বিশেষ ট্রেন চালাবে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি (৭,৭২৪)। ইতিমধ্যেই ১০,০০০টির বেশি ট্রেনের সফর সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
রেল পরিষেবার মানোন্নয়নের কথাও জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ২৯টি রেল ডিভিশনে ট্রেনের সময়নিষ্ঠতা ৯০ শতাংশের বেশি, অনেক ক্ষেত্রে তা ৯৮ শতাংশেরও ঊর্ধ্বে। এর পেছনে রয়েছে উন্নত পরিকাঠামো, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং আরও মসৃণ রেল পরিচালনা।

