রাজ্যে আরও একটা দাঙ্গা বাধানোর নীল নক্সা তৈরী করা হচ্ছে : আমরা বাঙালিা

আগরতলা, ১৮ সেপ্টেম্বর : রাজ্যে আরও একটা দাঙ্গা বাধানোর নীল নক্সা তৈরী করা হচ্ছে।বার বার শান্ত ত্রিপুরায় অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করে তুলেছে। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমরা বাঙালি দল।

দলের রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ত্রিপুরা রাজ্যের বিশেষতঃ এ ডি সি এলাকার বাঙালীদের উচ্ছেদের জন্য সর্বত্র মথার দলের পক্ষ থেকে হুমকি দিচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্রামগঞ্জ, গন্ডাছড়া, আমবাসার কলমছড়া এলাকায় যে সকল গরীব বাঙালীরা ৪০/৫০ বছর ধরে বসবাস করছে। যেহেতু এডিসি এলাকায় মথার দল ক্ষমতায় আছে সেহেতু মথার নেতৃত্বরা বাঙালীদের উচ্ছেদ করতে চায়।আর সরকারের নজরে সবকিছু থাকা সত্ত্বেও সরকার গদি রক্ষার জন্য একেবারে নীরব। জনজাতিরা সরকারি জমি জোর দখল করে নিচ্ছে অথচ প্রসাশন সম্পূর্ণ নীরব। আর বাকি দল গুলো জনজাতিদের ভোট পাওয়ার আশায় এই নিয়ে নীরব। একমাত্র আমরা বাঙালী দল এই অন্যায় গুলোর প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। তাছাড়া এই রাজ্য থেকে বাঙালীদের তাড়ানোর জন্য গো ব্যাক গো ব্যাক করছে।শাসক দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নীরবতায় এই কাজ করে চলেছে। অথচ এই রাজ্যে বাঙালীর প্রতি এত আঘাত এত অন্যায় হচ্ছে এর বিরুদ্ধে সব দল ভোটের স্বার্থে নীরব। আর তার বিরুদ্ধে আমরা বাঙালী দল বার বার প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।

এদিন তিনি আরও বলেন, আমরা বাঙালী দলেল রাজ্য জুড়ে তীব্র আন্দোলন দেখে শাসক দল সহ বাঙালী বিরোধী দল গুলো চিন্তায় পড়ে গেছে। তাই আমরা বাঙালী দলের ওরিয়েন্ট চৌমুহনীর সভার ১৫ দিন পর সচিবের নামে মামলা নেওয়া হয়েছে। অজুহাত আগরতলার মালিক ও ত্রিপুরার মালিককে বাঙালী বলার জন্য।এক সময় ত্রিপুরার রাজারা বাংলার সমতল অংশ ও পার্বত্য অংশ নিয়ে ত্রিপুরার রাজারা রাজত্ব করেছেন দীর্ঘ সময় ধরে। যখন ত্রিপুরার রাজারা বাংলার অন্চলে রাজত্ব করেছেন তখনও বাঙালীরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাছাড়া সচেতনতা সম্পন্ন বাঙালীর কৃষ্টি শিক্ষা সংস্কৃতি সামাজিকতা এ সব কিছুকে মান্যতা দিয়ে ত্রিপুরার রাজারা বাংলা ভাষাকে রাজভাষার মর্যাদা দিয়ে গেছেন। ত্রিপুরার রাজারা ও তার পরিবারের লোকেরা নিজেদের বাঙালী বলে গর্ববোধ করতেন। শুধু তাই নয় ত্রিপুরার জনজাতি ও বাঙালীরা বাংলা ভাষায় পড়াশোনা করে আজ সরকারী চাকরী করছে। এতদিন তো কোন সমস্যা ছিল না। দেশ ভাগের আগে পার্বত্য ত্রিপুরা ছিল এক অরণ্যে ঘেরা এক পাহাড়ি এলাকা।দেশ ভাগের পর বাঙালীরা এই রাজ্যে আসার পর বাঙালীদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফলে এই রাজ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আর এই উন্নয়নের সুফল জাতি জনজাতি সবাই ভোগ করছে। আর যে সকল অঞ্চলের লোকেরা এখনও বাঙালীর সংস্পর্শে আসতে পারেনি তারা এখন ও পিছিয়ে আছে।আর তাদের নিয়েই জনজাতি লোকেরা মেকীদরদী দেখিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, বার বার শান্ত ত্রিপুরায় অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করে তুলেছে।

তাঁর কথায়, রাজনৈতিক দল গুলোর সহযোগিতায় টাকা লুটছে আর বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে।আর পেছনে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র।কারণ তারা প্রতিনিয়ত জাতি জনজাতির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করতে চায় তারাই এই সব করছে। আমরা বাঙালী দল বার বার বলে আসছে ত্রিপুরার বনজ সম্পদ ও রাবার কে কাজে লাগিয়ে শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া। এর ফলে রাজ্যের মধ্যে যেমন বেকারত্ব কমবে এবং জাতি জনজাতির মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে তা দূর হবে। সরকার সেই পথে হাঁটছে না। বামেরা জাতি জনজাতির সংমিশ্রণে ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়নের চেষ্টা না করে ত্রিপুরার বুকে এক অশান্তির সৃষ্টি করে গেছে এডিসি দিয়ে।আজ দীর্ঘ চার দশক ধরে সত্তর শতাংশ এলাকা জুড়ে এডিসি হবার পর এডিসির জন্য আলাদা টাকা বরাদ্দ হয় তারপর বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত টাকা আসছে। এরপর ও কেন এডিসির উন্নয়ন হয়নি। আর বর্তমান সময়ে রাজ পরিবারের উত্তরাধিকারী এডিসির উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে বার বার আগরতলা শহরের উন্নয়ন কে দেখিয়ে বলছে বার বার বাংলাদেশীরা এসে গোটা রাজ্য দখল করে নিয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছে।এমনকি রাজ্যের দুই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ও বলছে একজন হলো চাঁদপুরের বাংলাদেশী আরেকজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাংলাদেশী মুখ্যমন্ত্রী। আর ত্রিপুরায় মণিপুরী তাঁতী এই রকম অনেক সম্প্রদায় আছে।তারা সবাই বাংলায় কথা বলে। তাই ত্রিপুরার মালিক বাঙালী বলা কোন সংবিধান বিরোধী মন্তব্য হতে পারে না। আমরা বাঙালী দলের আদর্শে ত্রিপুরার রাজারা ও তার পরিবারের লোকেরা সর্বদাই নিজেদের বাঙালী বলে পরিচয় দিয়ে গেছেন। আর যিনি নিজেকে স্বয়ং আগরতলার মালিক ও আগরতলাবাসীকে ভাড়াইট্টা কিড়াইদার বলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।