পিয়ূষ গোয়েলের বার্তা: টেকসই উন্নয়ন ভারতের অগ্রগতির অপরিহার্য স্তম্ভ

নয়াদিল্লি, ১৫ সেপ্টেম্বর: ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পিয়ূষ গোয়েল সোমবার টেকসই উন্নয়নকে দেশের অগ্রগতির “অপরিবর্তনীয়” স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিউরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস আয়োজিত আন্তর্জাতিক ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশন জেনারেল মিটিং এক্সিবিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গোয়েল বলেন, ভারতের উন্নয়ন মডেল প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে উঠেছে, যা দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।

“প্রতিটি ভারতীয়ের মনে প্রকৃতির প্রতি সম্মান সহজাত। আমাদের কাছে টেকসইতা কোনো বাধ্যবাধকতা নয়, এটি জীবনের এক রীতি,” বলেন মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ভারতের উন্নয়ন কৌশলে গুণগত মান, টেকসইতা এবং ভোক্তা কল্যাণ—এই তিনটি ক্ষেত্রের ওপর সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

পিয়ূষ গোয়েল আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “ভালো মানদণ্ডই এখন সময়ের দাবি। এগুলো শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন নয়, আন্তর্জাতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও সহায়ক।”

তিনি জানান, উন্নত মান পণ্যের নির্ভরযোগ্যতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ায়, অপচয় কমিয়ে খরচ হ্রাস করে এবং উৎপাদন দক্ষতা বাড়ায়। খেলনা শিল্পে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার-এর সাফল্যের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে বাদ পড়েছে, দেশীয় উৎপাদন বেড়েছে এবং ভোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।

ভারতের জলবায়ু প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে গোয়েল জানান, প্যারিস চুক্তির আওতায় ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ভারত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সম্প্রতি সিওপি সম্মেলনগুলিতে ভারত তার প্রতিশ্রুতি আরও জোরদার করেছে।

তিনি বলেন, “ভারত এই প্রতিশ্রুতি পালন করছে না কোনো আন্তর্জাতিক চাপের কারণে, বরং এটি আমাদের আন্তরিক দায়বদ্ধতা।” বৃত্তাকার অর্থনীতি, বর্জ্য হ্রাস, এবং সম্পদ সংরক্ষণ ভারতের উন্নয়ন দর্শনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “জিরো ডিফেক্ট, জিরো ইফেক্ট” নীতির প্রসঙ্গ তুলে গোয়েল বলেন, সারা দেশে গুণগত মান ও টেকসইতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য সরকার কাজ করছে। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “সেই দিন দূরে নয়, যেদিন বিশ্ব বলবে – ‘ডিজাইন ইন ইন্ডিয়া, মেড ইন ইন্ডিয়া’ এবং এই পণ্যগুলি বিশ্বজুড়ে নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক হবে।”

মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়নে বিদ্যুৎ ও ইলেকট্রনিক্স শিল্পের ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভারতে বৈদ্যুতিক থেকে ইলেকট্রনিক সমাধানের দিকে রূপান্তর শক্তি সঞ্চয় এবং জলবায়ু কার্যক্রমে সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেষে গোয়েল সমস্ত অংশীদারকে একটি মানসম্মত, নিরাপদ এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। “সমন্বিত মানদণ্ড প্রবৃদ্ধি ঘটাতে পারে, ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে পারে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ রক্ষা করতে পারে,”—এই বার্তার মাধ্যমে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।