বিহার বিধানসভা নির্বাচন: আসন বন্টন নিয়ে মহাগঠবন্ধনে টানাপোড়েন, কংগ্রেস ও ভিআইপি কড়া অবস্থানে

পাটনা, ১৩ সেপ্টেম্বর: আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মহাগঠবন্ধনের আসন বন্টন নিয়ে উত্তেজনা চরমে। গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলগুলি — কংগ্রেস ও বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি) — নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় আলোচনায় জট তৈরি হয়েছে। তার উপর রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা-র মহাগঠবন্ধনে সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তি এই জটিলতা আরও বাড়িয়েছে।

রাহুল গান্ধীর “ভোটাধিকার যাত্রা”-র মাধ্যমে রাজ্যে ব্যাপক জনসমর্থনের দাবি তুলে কংগ্রেস ৭০টি আসনের দাবি করছে — ২০২০ সালে তারা যতগুলো আসনে লড়েছিল। যদিও সেই নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ১৯টি আসনেই জিততে পেরেছিল।

অন্যদিকে, তাদের প্রধান শরিক আরজেডি ১৪৪টি আসনে লড়ে ৭৫টি আসনে জয়ী হয়েছিল, যা তাকে ২৪৩ সদস্যবিশিষ্ট বিধানসভায় একক বৃহত্তম দল করে তোলে। তবে এনডিএ ১২৫টি আসন জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসে, মহাগঠবন্ধনের ঝুলিতে যায় ১১০টি আসন। অনেকের মতে, কংগ্রেসের খারাপ স্ট্রাইক রেটই তখন জোটের ভরাডুবির অন্যতম কারণ ছিল।

বিহার কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা জানান, “ভোটাধিকার যাত্রা-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যে কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হয়েছে। আমরা এখন আরজেডি-র উপর নির্ভরশীল নয়, বরং একটি জাতীয় দল হিসেবে আমাদের সম্মানজনক আসন দরকার। ২০২৪ লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ৩টি ও আরজেডি ৪টি আসনে জিতেছে — এটা মাথায় রাখতে হবে।”

অপরদিকে, এআইসিসি-র বিহার ইনচার্জ কৃষ্ণা অল্লাভারু দিল্লিতে বলেন, “কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা বিহারের জনগণ ঠিক করবেন।” রাজনৈতিক মহলের মতে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে কংগ্রেস আরজেডি-কে বার্তা দিতে চেয়েছে যে তারা তেজস্বী যাদবের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হওয়াকে নিঃশর্তভাবে মেনে নিচ্ছে না।

ভিআইপি নেতা মুকেশ সহানীও আরজেডি-র উপর চাপ বাড়িয়ে ৬০টি আসনের দাবি করেছেন এবং তাঁকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত ২০-২৫টি আসনে রাজি হতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরজেডি-র এক নেতা জানিয়েছেন, “আমরা ২০২৪ লোকসভা ভোটে ভিআইপি-কে তিনটি আসন দিয়েছিলাম। সেই হিসেবে বিধানসভায় ১৮-২০টি আসন হতে পারে তাদের প্রাপ্য। তবে সেটা তখনই সম্ভব, যদি অন্য শরিক দলগুলো নিজেদের কোটা থেকে ছাড় দিতে রাজি হয়।”

নতুন আরএলজেপি ও জেএমএম যোগ দিলে মহাগঠবন্ধনে শরিক দলের সংখ্যা হবে আট — বর্তমান শরিকরা হল কংগ্রেস, আরজেডি, ভিআইপি, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, সিপিআই(এম), সিপিআই। নতুন দলগুলির জন্য জায়গা করে দিতে হবে বিদ্যমান শরিকদেরই, এটাই এখন বড় প্রশ্ন।