২০৩০ সালের মধ্যে আলু ও বীজে স্বনির্ভর হবে ত্রিপুরা, হেক্টরপ্রতি ৬২.৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনে ত্রিপুরার রেকর্ড : মন্ত্রী রতন লাল নাথ

আগরতলা, ১২ সেপ্টেম্বর: ২০৩০ সালের মধ্যে ত্রিপুরাকে আলু ও আলুবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টার–এর সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি আগরতলায় ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের ডিরেক্টর জেনারেল সাইমন হেক ও কান্ট্রি ম্যানেজার নিরোজ শর্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

মন্ত্রী জানান, বর্তমানে ত্রিপুরায় ২৩ হাজার ৭৪৬ জন আলুচাষি রয়েছেন এবং ৪৭ হাজার ৬৩৭ কানি জমিতে, অর্থাৎ প্রায় ৭,৬২২ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে হেক্টরপ্রতি আলু উৎপাদন ছিল ১৯.১৬ মেট্রিক টন।

মন্ত্রী আরো বলেন, আগে রাজ্যে আলুর বীজ আসত সংরক্ষিত আলু থেকে কিংবা পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও আগরতলার গোলবাজার থেকে। কিন্তু এর গুণগত মানের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না, উৎস ছিল অনির্দিষ্ট এবং উৎপাদনও হত খুবই কম। পরে রাজ্যে ট্রু পটেটো সিডস চালু করা হয়। তবে এটি ব্যয়বহুল এবং দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন। নাগিছড়া গবেষণা কেন্দ্র ছাড়া এর উৎপাদন সম্ভব ছিল না এবং উৎপাদনও তেমন বড়সড় ছিল না ।

তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যে আলু উৎপাদন হচ্ছে ১.৪৬ লক্ষ মেট্রিক টন, যেখানে চাহিদা ১.৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে ঘাটতি পূরণের জন্য বাইরের রাজ্য থেকে আলু আমদানি করতে হত।

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার আসার পর ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে নতুন পদ্ধতি এপিক্যাল রুটেড কাটিং চালু করি। কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় কৃষি বীমা যোজনা থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে আমরা পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের সঙ্গে প্রযুক্তি সহায়তা, দক্ষতা বৃদ্ধি, গবেষণা, সার্টিফিকেশন, বাইরে রপ্তানি এবং আলুচিপস প্রসেসিং সেন্টার স্থাপনের জন্য চুক্তি হয়েছে। ২০২৩ সাল থেকে প্রকল্প চালু হয়। প্রথম বছরে ১০৪ জন চাষিকে বীজ ও চারাগাছ দেওয়া হয়েছিল, ২০২৪ সালে ৪০২ জন চাষিকে দেওয়া হয়েছে, আর এখন ৪,০০০ জন চাষি এর সুবিধা পাবেন।”

মন্ত্রী জানান, সাইমন হেক স্বীকার করেছেন তিনি ভারতের কোথাও এভাবে আলু উৎপাদন দেখেননি। আগে যেখানে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ছিল ১৯.১৬ মেট্রিক টন, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৬২.৫০ মেট্রিক টন, যা রেকর্ড।

রতন লাল নাথ আরও বলেন, ২০২৮-২৯ অর্থবছরের মধ্যে ত্রিপুরা আলুর বীজে স্বনির্ভর হবে এবং ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে আলু উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। এরপর আমরা রাজ্যের বাইরে রপ্তানির দিকেও এগোতে পারব। সেটাই আমাদের পরিকল্পনা।