আগরতলা, ৭ সেপ্টেম্বর: স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় ড্রেন সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠল। গতকাল গভীর রাতে লক্ষীনারায়ণ বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ড্রেন নির্মাণের সময় নির্ধারিত অংশ ছেড়ে রাস্তার পাশে অতিরিক্ত জায়গা কাটার ফলে গ্যাস লাইন, জলের লাইন এবং বিদ্যুৎ লাইন একযোগে ছিন্ন হয়ে যায়। এর জেরে পুরো আগরতলা শহরসহ সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা ব্যাহত হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রেনের বাইরের অংশ কাটলে মোটা ক্যাবল পাওয়া যায়, যার ভেতরে থাকে তামা। অভিযোগ অনুযায়ী শ্রমিকরা এই কেবল থেকে তামা আলাদা করে বাজারে বিক্রি করে থাকে। এ ধরনের অনিয়ম নিয়মিত ঘটলেও নির্মাণস্থলে ঠিকাদার সংস্থার কোনও উচ্চপদস্থ কর্মী উপস্থিত থাকেন না। ফলে কাজ প্রায়শই নজরদারিহীনভাবে চলে।
ট্রিপুরা ন্যাচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (টিএনজিসিএল)-এর তরফে জানানো হয়েছে, মাটি কাটার আগে সংস্থাকে কোনও ধরনের খবর দেওয়া হয়নি। এর ফলে পাইপ লাইন কেটে যাওয়ায় আগরতলা শহরের পাশাপাশি সার্কিট হাউজ, গোয়ালাবস্তি, শালবাগান, এয়ারপোর্ট রোড ও অভয়নগর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় একযোগে সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় নিত্যদিনের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
এ ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, প্রশাসন ও ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতির কারণে বারবার তাঁদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ড্রেন সংস্কারের কাজ চলায় রাজধানীর বিভিন্ন অংশে যাতায়াতও কঠিন হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ট্রাফিক জ্যামের কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে পড়াশোনা, চাকরি কিংবা জরুরি কাজের ক্ষতি হচ্ছে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন, তবু যানজটের সমস্যা কতটা সমাধান হবে তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, আগাম কোনও নোটিশ ছাড়াই প্রাক-পূজা প্রস্তুতির নাম করে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণে শহরের বহু মানুষ পানীয় জলের অভাব, ব্যবসায়িক ক্ষতি এবং গৃহস্থালির সমস্যার মুখে পড়ছেন।
একদিকে স্মার্ট সিটির উন্নয়নমূলক কাজ, অন্যদিকে তার ফলশ্রুতিতে পরিষেবা বিপর্যয়—এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে কার্যত দিশেহারা আগরতলার সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, নির্মাণকাজে শৃঙ্খলা ও নজরদারি বাড়াতে হবে, নইলে একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।

