আগরতলা, ৬ সেপ্টেম্বর: ধর্মনগর মহকুমা অফিসের চরম জালিয়াতি আরো একবার প্রকাশ্যে বেরিয়ে এলো। এক ব্যক্তির জায়গা অপর এক ব্যক্তির নামে রয়েছে তাও আবার আট বছর পূর্বে মৃত ব্যক্তি ওই জায়গার দলিলে স্বাক্ষর করেছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে। এমনই এক ভূতুড়ে কান্ড সংগঠিত হলো ধর্মনগর মহকুমাধীন কদমতলা ব্লক এলাকার ফুলবাড়ি পঞ্চায়েতের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহীন আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে।
তিনি দীর্ঘ লাঞ্ছনার পর শনিবার সকালে সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে সমস্ত ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, উনার মা আজিনা বিবির নামে ১৪০ শতক(৭০ গন্ডা) টিলা জমি রয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে উনার ঐ মহিলা মারা যান। এরপর যথারীতি ওই জায়গার উত্তরাধিকার হিসাবে শাহীন আহমেদ মালিকানাধীন গ্রহণ করেন। এইভাবে যথারীতি চলতে থাকলেও ২০১৬ সালের ১৩ই জুলাই উক্ত জায়গা এলাকারই মকরম আলী বলে এক ব্যক্তি দখল করে এবং নিজের নামে দলিল ও পর্চা বাগিয়ে নেয়। আশ্চর্যের বিষয় ওই দলিল ও পর্চায় মৃত মহিলা তথা শাহীন আহমেদের মা আজিনা বিবির স্বাক্ষর রয়েছে।
কিন্তু তখন সেই ঘটনা প্রকাশ্যে না আসলেও ইদানিংকালে দেখা যায়, মকরম আলী উক্ত জায়গা অন্যান্য ব্যক্তি এমনকি অবৈধ বাংলাদেশী এক মহিলা সাহিদা আক্তার এর নিকট বিক্রি করছেন। তাতে বাঁধা দিলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসে বলে জানান শাহীন। তিনি চুরাইবাড়ি তহশীল অফিস ও ধর্মনগর মহকুমা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সম্পূর্ণ ঘটনা খতিয়ে দেখেন এবং দেখতে পান উক্ত ৭০ শতক(৩৫ গন্ডা) জায়গা মকরম আলীর নামে রয়েছে। এতে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন ! তাছাড়াও উক্ত পর্চা ও দলিলের ডিড রাইডার হিসাবে বাবুল নাথের স্বাক্ষর রয়েছে। উক্ত ঘটনায় সমস্ত ফুলবাড়ী এলাকার মানুষ হতবাক হয়ে পড়েন কি করে আট বছর পূর্বে একজন মৃত মহিলা উক্ত দলিল ও পর্চায় স্বাক্ষর করতে পারেন ? এভাবে চরম জালিয়াতি ও ভুতুড়ে কান্ডের একাধিক নজির রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস তথা মহকুমা শাসক অফিসে। এর পূর্বেও একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম দখল করেছে এই অফিসগুলো। আর চুরাইবাড়ি তহশীল অফিসের কথা না বলাই ভালো। বহু মানুষ নিজের জায়গা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে থাকেন স্থানীয় কিছু ভুমি মাফিয়া তথা দালালের কারণে। অর্থের বিনিময়ে এক ব্যক্তির জায়গা অপর ব্যক্তির নামে, এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও কাগজ করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে উক্ত ঘটনার ন্যায় বিচার ও নিজের জায়গা পুনরায় ফিরে পেতে শাহীন আহমেদ চৌধুরী প্রথমে চুরাইবাড়ি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন মকরম আলীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও মহকুমা শাসক অফিসেও নালিশ জানিয়েছেন উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এখন তিনি সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে ন্যায় বিচার ও নিজের জায়গা ফিরে পেতে জেলা প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

