নতুন দিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা শুক্রবার যমুনা নদীর জলস্তর পর্যবেক্ষণ ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। তিনি সমস্ত জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে এবং নিম্নভূমিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ ও সুরক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।
এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ মুখ্যমন্ত্রী লেখেন,
“আজ আমি দিল্লির সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করি। যমুনা নদীর জলস্তর এবং ভারী বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সরকারি আধিকারিকদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে— ২৪x৭ মনিটরিং চালু রাখতে হবে, ত্রাণকাজে কোনওরকম গাফিলতি চলবে না এবং প্রতিটি দিল্লিবাসীর নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রাখতে হবে। সরকারের সম্পূর্ণ টিম সতর্ক এবং যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত।”
শুক্রবার সকাল ৭টায় পুরনো রেল ব্রিজে যমুনার জলস্তর ছিল ২০৭.৩৩ মিটার, যা সকাল ৬টার তুলনায় সামান্য কম (২০৭.৩৫ মিটার)।
সকাল ৮টার মধ্যে তা আরও কমে ২০৭.৩১ মিটার-এ নেমে আসে। এই পতন সাময়িক স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকরা।
তবে বৃহস্পতিবার এই জলস্তর পৌঁছেছিল এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ২০৭.৪৮ মিটার-এ, যা ১৯৬৩ সালের পর পঞ্চমবারের মতো ২০৭ মিটার ছাড়িয়েছে।ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ৮ সেপ্টেম্বর আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে এবং বিকেলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। তবে ৯ সেপ্টেম্বর ফের তীব্র বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, আর ১০ সেপ্টেম্বর আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার কথা। এই সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।
সপ্তাহের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা গীতা কলোনি ফ্লাইওভার ও ওল্ড আয়রন ব্রিজ সংলগ্ন বন্যা দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন ত্রাণ শিবিরে অবিরামভাবে পরিস্কার পানীয় জল, খাদ্য সামগ্রী, চিকিৎসা সহায়তা এবং নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হয়। তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, “সরকার সর্বদা সতর্ক রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। জনগণের পাশে সরকার আছে।”
সার্বিকভাবে, যমুনার জলস্তর কিছুটা কমার ইঙ্গিতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েক দিন নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার নেতৃত্বে দিল্লি সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বাসিন্দাদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

