নয়াদিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর : চরম প্রতিকূল আবহাওয়া ও দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে সাহসিকতার এক উজ্জ্বল নজির স্থাপন করল ভারতীয় সেনা। ৪ঠা সেপ্টেম্বর রাতে, লাদাখের কোংমারু লা পাস -এ ১৭,০০০ ফুট উচ্চতায় আটকে পড়া দুই দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিককে সফলভাবে উদ্ধার করল সেনার এভিয়েশন উইং।
রাত **৮:০৫ মিনিটে**, সেনা সদর দপ্তরে একটি **জরুরি বার্তা** আসে — দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক **হিউন উ কিম** ও তাঁর স্ত্রী হঠাৎ উচ্চতাজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পার্বত্য অঞ্চলে আটকে পড়েছেন এবং দ্রুত উদ্ধার প্রয়োজন।
সময় নষ্ট না করে, ৮:২০ মিনিটে সেনার এভিয়েশন হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হয়। মিশনটি ছিল অত্যন্ত জটিল — বরফে ঢাকা ভূখণ্ড, ক্ষীণ দৃশ্যমানতা, ধারালো পাহাড়ি খাঁজ এবং অনির্ধারিত হেলিপ্যাডে নাইট ভিশন গগলস ব্যবহার করে নিখুঁত ল্যান্ডিংয়ের প্রয়োজন ছিল।
সমস্ত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে, পাইলটদের নেতৃত্বে হেলিকপ্টার রাত ৯:১৫ নাগাদ সফলভাবে অবতরণ করে। দ্রুত সেই দম্পতিকে হেলিকপ্টারে তুলে নেওয়া হয় এবং নিকটবর্তী মেডিক্যাল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয় চিকিৎসার জন্য।
এই উদ্ধার অভিযান একটি ‘টেক্সটবুক অপারেশন’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে সাহস, সমন্বয়, এবং প্রশিক্ষণ তিনটির অসাধারণ মিল লক্ষ্য করা গেছে। একদিকে যেমন এটি সেনার উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে অপারেশন পরিচালনার ক্ষমতা প্রদর্শন করে, তেমনি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবেও কাজ করেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, যখন ভারতের উত্তরাঞ্চল — যেমন উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীর — মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি, তখনও ভারতীয় সেনা হেলিকপ্টার ও ড্রোনের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ, রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা ও নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর সহ বহু কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হল, ভারতীয় সেনা কেবল সীমান্ত রক্ষার জন্য নয়, বরং যে কোনও সংকট মুহূর্তে, নিজের জীবন ঝুঁকির মধ্যেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় — তা সে দেশের নাগরিক হোক বা বিদেশি।

