‘চোরের দল বিজেপি’ — বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, বিশৃঙ্খলায় আহত বিধায়ক

কলকাতা, ৪ সেপ্টেম্বর: বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় চরম উত্তেজনার আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি ও কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। একই সঙ্গে বিধানসভায় হট্টগোলের মধ্যে বিজেপির চিফ হুইপ ডঃ শঙ্কর ঘোষ মারাত্মকভাবে আহত হন।

বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী যখন বাংলার অভিবাসী শ্রমিকদের উপর বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে হওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে বক্তব্য রাখতে ওঠেন, তখনই বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে শুরু করেন। “জয় শ্রীরাম” ধ্বনিতে বিধানসভার কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার শৃঙ্খলা রক্ষা করতে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে দিনভর সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি বিধানসভা ছাড়তে অস্বীকার করায় মার্শাল ডেকে তাঁকে জোর করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ধস্তাধস্তির মধ্যেই তিনি আহত হন বলে অভিযোগ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“বিজেপি বাংলাবিরোধী দল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার বাংলাকে কোণঠাসা করতে চেয়েছেন। অভিবাসী বাঙালিদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনাও বাধা দিচ্ছে বিজেপি।”

তিনি আরও বলেন,“বিজেপি চোরদের দল, ভোট লুঠের দল। সংসদে আমাদের সাংসদদের সিআইএসএফ দিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে। বাংলাবিরোধী বিজেপিকে হটাও, দেশ বাঁচাও।”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় বিজেপি সদস্যদের হট্টগোল আরও তীব্র হয়। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “স্মরণে রাখুন, একদিন এই বিধানসভায় একজন বিজেপি বিধায়কও থাকবে না। মানুষ আপনাদের ক্ষমতা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। মোদি-অমিত শাহর সরকার খুব শীঘ্রই পতনের মুখে।”

অন্যদিকে, বিধানসভায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ লেখেন, “আজ বিধানসভায় গণতন্ত্রকে হত্যা করলেন গণতন্ত্র হত্যাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর প্রশাসন।”

তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন,“সমগ্র তৃণমূল কংগ্রেস গুণ্ডাদের দল। ওরা শঙ্কর ঘোষকে মারধর করেছে। এই পরিকল্পিত হামলার পিছনে রয়েছেন চোর মমতা নিজেই। তিনিই বাংলার সবচেয়ে বড় চোর।”

প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারী আগেই এই বিশেষ অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন।

তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভায় রুল ১৬৯-এর অধীনে একটি প্রস্তাব আনে, যেখানে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি অভিবাসীদের ওপর অত্যাচারের ঘটনাগুলিকে তুলে ধরা হয়।

এই ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।