আগরতলা, ২৭ আগস্ট : মোদী সরকারের নেতৃত্বে রেলে বিপ্লব ঘটে চলেছে। ত্রিপুরার উন্নয়নের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা হলো আজ। চূড়াইবাড়ি থেকে সাব্রুম পর্যন্ত ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। মঙ্গলবার আগরতলা রেলস্টেশন কমপ্লেক্সে ১৩২ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন এবং ১৩২ কেভি ফিডার বে উদ্বোধনকালে এই ঘোষণা করেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
মন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৬৪ সালে প্রথমবার উত্তর জেলার ধর্মনগরে ট্রেন পৌঁছায়। দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৮ সালে আগরতলা ট্রেন পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ২০১৯ সালে রেল পৌঁছায় সীমান্ত শহর সাব্রুমে। তিনি জানান, গত সাত বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে রেলের ব্যাপক রূপান্তর ঘটেছে। মিটার গেজ থেকে ব্রডগেজে রূপান্তর এবং ২০২৩ সালে আগরতলা-আখাউড়া আন্তর্জাতিক রেল সংযোগের সম্পূর্ণতা তার উজ্জ্বল প্রমাণ। বর্তমানে চুরাইবাড়ি থেকে সাব্রুম পর্যন্ত মোট ২৭১ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইন বিদ্যুতায়নের আওতায় এসেছে। ‘অমৃত ভারত প্রকল্প’-এর অধীনে আগরতলা, উদয়পুর, কুমারঘাট এবং ধর্মনগর স্টেশনের উন্নয়ন কাজও চলছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে রয়েছে আগরতলা-শিলচর, ত্রিপুরাসুন্দরী, রাজধানী, জানশতাব্দী, আগরতলা-গুয়াহাটি , গরিব রথ ও মুম্বই স্পেশাল সহ একাধিক ট্রেন। পাশাপাশি চারটি ডেমু ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করছে, যা প্রায় বারো হাজার যাত্রীকে বহন করছে।
রেলপথে বিদ্যুতায়নের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে কয়লার ইঞ্জিন, পরে ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে এখন বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনে জোর দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশের মোট ৬৯,৫০০ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইনের মধ্যে ৬৮,৬০০ কিলোমিটার বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে, যা ৯৮.৮০ শতাংশেরও বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হলো ত্রিপুরার ২৭১ কিলোমিটার রেললাইন।
মন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ও এনএফআর চাইলে এখনই বিদ্যুৎচালিত ট্রেন পরিষেবা শুরু করা সম্ভব। রতন লাল নাথ আরও জানান, বিদ্যুৎ ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে রাজ্যে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ৪৫টি স্থানে চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। এদিনের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তথা মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, বিধায়ক মীনা রানি সরকার, বিধায়ক অভিষেক দেবরায় সহ এনএফআর-এর ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা।

