বিহারে ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা নিয়ে কড়া আক্রমণে রাহুল গান্ধী

আরারিয়া, ২৪ আগস্ট: বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। রবিবার আরারিয়ায় ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’-র একটি জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গরিব ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, “সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেসরকারিকরণের পর এবার গরিবদের ভোটও চুরি করতে চাইছে। এই কাজ তারা নির্বাচন কমিশনের সাহায্যে করছে।”

রাহুল গান্ধী নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “এটা এখন আর নির্বাচন কমিশন নয়, এটা ‘ইলেকশন ওমিশন’। এসআইআর আসলে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে গরিবদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।” তিনি এই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বলেন, “সংবিধান দেশের প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে। এই প্রক্রিয়া সেই অধিকারের বিরুদ্ধে।”

তিনি আরও বলেন, আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও তার জোটসঙ্গীরা জনগণের কাছ থেকে কঠিন জবাব পাবে। “ভারত জোট বিহারে এই ভোট চুরির ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না,” জানিয়ে তিনি কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন।

নির্বাচনী বিষয় ছাড়াও রাহুল গান্ধী কেন্দ্রীয় সরকারের বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক নীতিরও সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকার গরিব ও যুব সমাজের কর্মসংস্থানের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, “বেসরকারিকরণের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ ধ্বংস করে এবার তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।”

প্রসঙ্গত, গত ১৭ আগস্ট সাসারাম থেকে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের ১,৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’। এই যাত্রা ১৬ দিনের মধ্যে বিহারের ২০টিরও বেশি জেলা পাড়ি দেবে এবং ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় একটি মহাসভায় শেষ হবে। এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হল ভোটাধিকার রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং এসআইআর-এর বিরোধিতা করা।

রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যে বিহারের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিরোধীরা এই ইস্যুতে আরও সংগঠিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।