গোমতী নদীতে ড্রেজিং : ৬ কিমি নৌপথে কাজ সমাপ্ত, বাকি আরও ৪৮ কিমি, প্রকল্পের সময়সীমা পুনর্ণবিকরণের তোড়জোড়

আগরতলা, ২২ আগস্ট : ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের সাথে অভ্যন্তরীণ নৌপথে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে গোমতী নদীতে দীর্ঘ ৬ কিমি নৌপথে ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। আরও ৪৮ কিমি নৌপথে ড্রেজিং-র কাজ বাকি রয়েছে। এক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় প্রকল্পের পুনর্ণবিকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ নৌপথ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের গোমতী নদীতে ড্রেজিং-র কাজের খোঁজ নেওয়ার পর এই তথ্য় উঠে এসেছে।

প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নতুন পথ খোলার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পটি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সময়ে অনুমোদিত হয়েছিল। এই রুটটি ত্রিপুরাকে বিশ্বের অভ্যন্তরীণ নৌপথ সংযোগের মানচিত্রে স্থাপন করতে সহায়ক হবে। তাতে, এই রাজ্য প্রথমে বাংলাদেশের সঙ্গে এবং পরবর্তীতে কলকাতার সঙ্গে নৌপথে সংযুক্ত হবে। অভ্যন্তরীণ নৌপথ পরিবহণ সম্ভব করতে যে পরিকাঠামো উন্নয়ন চলছে তা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গোমতী নদীতে ড্রেজিং গত জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। বর্তমানে মহারাণী এলাকা থেকে ড্রেজিং হচ্ছে। এটি ধিরে ধিরে সিপাহিজলা জেলার সোনামুড়া পর্যন্ত করা হবে। কারণ ওই এলাকা দিয়েই সীমান্তবর্তী নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ড্রেজিং প্রকল্পের জন্য ১৯.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আশা করা হচ্ছিল, পুরো কাজ এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। নদী রুটটি বাংলাদেশে দাউদকান্দি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। কিন্তু, নানাহ কারণে ওই কাজ শেষ হতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।

এই নদী রুটটি ২০২০ সালে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ড্রেজিং শেষ হলে, ছোট জাহাজগুলি ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশ এবং কলকাতার মধ্যে চলাচল করতে পারবে। পরিবহণ খরচ অনেকটাই কমে যাবে এবং সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য এটি একটি লাভজনক প্রকল্প হবে। এদিকে, গোমতী নদীতে ড্রেজিং সম্পূর্ণ হলে বন্যা মোকাবিলা এবং সেচ ব্যবস্থায় যথেষ্ঠ উপকার হবে, এমনটাই আশাবাদী ত্রিপুরা সরকার।

গোমতী নদীতে ড্রেজিং-র কাজের পরিদর্শনে এসেছিল কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ নৌপথ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল। পরিদর্শনকালে তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের জয়েন্ট ট্রান্সপোর্ট কমিশনার, উদয়পুর মহকুমা শাসক, পর্যটন, পরিবহন এবং পানীয় জল স্বাস্থ্যবিধান দফতরের বিভিন্ন আধিকারিকগণ।

পরিবহন দফতরের চিফ মোটর ভেহিক্যাল ইন্সপেক্টর দিবাকর দাস জানিয়েছেন, গত জানুয়ারী থেকে গোমতী নদীতে একটি যন্ত্রের সাহায্যে ড্রেজিং-র কাজ হয়েছে। ফলে, যথা সময়ে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তাই, আরো দুইটি যন্ত্রের সাহায্যে প্রকল্পের পুরো কাজটি সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ওই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে কাজ অসমাপ্ত থাকবে, তাই প্রকল্পের সময়সীমা পুনর্ণবিকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। নয়তো, বরাদ্দ অর্থ ব্যবহার সম্ভব হবে না।

দিবাকর বাবু জানিয়েছেন, প্রকল্পের সময়সীমা পুনর্ণবিকরণের ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া, কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ নৌপথ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গোমতী পাড়ে আরও কি ধরণের উন্নয়ন কার্য সম্পাদন করা যাবে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিল্লির কাছে দেবে।