ওয়াশিংটন, ১৪ আগস্ট : আসন্ন ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক যদি ‘সফল না হয়’ তাহলে ভারতের উপর আরও শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। বুধবার ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, আমরা রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর দ্বিতীয়বার শুল্ক চাপিয়েছি। যদি আলাস্কায় বৈঠকে পরিস্থিতি ভালো না যায়, তাহলে শুল্ক আরও বাড়তে পারে।”
আগামীকাল শুক্রবার ১৫ আগস্ট আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মূলত ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধ করার পথ খোঁজার লক্ষ্যেই এই বৈঠক।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ইতিমধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কিন্তু ৭ আগস্ট তিনি ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বসান, ফলে মোট শুল্কহার দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। ট্রাম্প সরাসরি অভিযোগ করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে “যুদ্ধ মেশিনকে জ্বালানি দিচ্ছে” এবং তিনি এ ধরনের অবস্থানে খুশি নন।
একইদিনে ট্রাম্প রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে “চরম পরিণতি”। প্রেসিডেন্টের ভাষ্য অনুযায়ী, আলাস্কা বৈঠকের পর যদি রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ নেবে। বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্প নিজেই কূটনৈতিক চাপ তৈরি করছেন। তবে ইউরোপিয়ান দেশগুলোও এই সেকেন্ডারি স্যাংশনে যুক্ত হওয়া উচিত। একা আমেরিকা চাপ তৈরি করলে হবে না, ইউরোপীয়দেরও ভূমিকা রাখতে হবে।
এদিকে চলতি সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। জেলেনস্কি ভারতের প্রতি শান্তি প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে আহ্বান জানান। ফোনালাপে মোদি বলেন, যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ ও দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট। ভারত এই প্রচেষ্টায় তার সামর্থ্যমতো ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্টভাবে জানান, ভারত কখনোই কৃষকের স্বার্থে আপোস করবে না, অর্থনৈতিক ক্ষতির শঙ্কা থাকলেও না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক ট্রাম্পের শুল্ক দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছে।
মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের আমদানি বাজারনির্ভর এবং ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া ভারত তার পূর্ববর্তী বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, যারা ভারতের সমালোচনা করছে, তারা নিজেরাও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে।

