ধর্মনগর হাসপাতালে প্রসূতির রহস্যজনক মৃত্যু, উত্তাল জনতা, ঘটনায় কংগ্রেসের ধর্ণা

ধর্মনগর, ১৪ আগস্ট: উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মৃতার নাম হাসিনা বেগম (২২)। বাবার বাড়ি ডুপিরবন্ধ গ্রামে, বিবাহ হয়েছিল পূর্ব তিলথৈ এলাকার পালগেঁয়ে।

দুই দিন আগে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসিনা ভর্তি হন হাসপাতালে। আজ ভোররাত প্রায় তিনটার সময় সিজারের মাধ্যমে একটি সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু মাত্র দুই ঘণ্টা পর, ভোর পাঁচটার দিকে, তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়রা হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং ডাক্তারকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা নার্সদের প্রশ্ন করেন—সিজারের রোগীকে কেন আইসিইউ বা পোস্ট-অপারেটিভ রুমের বদলে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখা হলো? নার্সদের দাবি, আইসিইউ-তে সিট না থাকায় তাঁকে জেনারেল ওয়ার্ডে শিফট করা হয়েছে। এতে উত্তেজিত গ্রামবাসীর প্রশ্ন—যদি সিট না থাকে, তাহলে কেন অন্যত্র রেফার করা হলো না? নার্সরা জানান, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ডাক্তার নেবেন। আর তাতেই মৃতার পরিবারের লোকজনেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসিনা ভর্তি হওয়ার সময় তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল, কিন্তু সন্তান জন্মের মাত্র দুই ঘণ্টার মাথায় কীভাবে মৃত্যু হলো, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।

ঘটনার প্রতিবাদে ভোরেই কংগ্রেস সমর্থকেরা হাসপাতালে পৌঁছে
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট এই ঘটনার জবাব চাই বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। কেন প্রসূতিকে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখা হলো তার ব্যাখ্যা চান কংগ্রেস সমর্থকেরা। পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে হাসপাতালে ধর্না দেওয়া হয়।

এদিকে খবর পেয়ে ধর্মনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আসে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পূর্ব তিলথৈ ও ডুপিরবন্ধ গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। উত্তর জেলার মানুষ এখন অপেক্ষা করছে—চিকিৎসক এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই মৃত্যুর জন্য কী ব্যাখ্যা দেবেন।