নয়াদিল্লি, ১৪ আগস্ট: স্বচ্ছতা ও পানীয় জলের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী অবদান রাখায় মেঘালয়ের চারজন গ্রাম নেতাকে এবছর স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠানে রেড ফোর্টে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত মিশন–গ্রামীণ এবং জল জীবন মিশনের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজেদের গ্রামকে “ওডিএফ প্লাস” মর্যাদা অর্জনে করেছেন এই নেতারা।
অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন: ইস্ট খাসি হিলস জেলার লাইটমিনসাও গ্রামের লেভেরিয়াস ধকর, ইস্ট জায়েন্টিয়া হিলসের লুমশকেন গ্রামের কৃন ধকর, ওয়েস্ট গারো হিলসের আমিন্ডা রাংসাগ্রে গ্রামের কাসিনো মারাক এবং ইস্ট গারো হিলসের চাচাতগ্রে গ্রামের আলমেন ডি. শিরা। প্রত্যেকে তাঁদের পত্নীসহ ১৫ আগস্ট দিল্লির রেড ফোর্টে উপস্থিত থাকবেন।
এই চারটি গ্রামই ওডিএফ প্লাস মর্যাদা পেয়েছে — অর্থাৎ খোলা জায়গায় মলত্যাগ মুক্ত অবস্থার পাশাপাশি কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নত, কম্পোস্টিং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সফল। একই সঙ্গে, জল জীবন মিশনের অধীনে প্রত্যেক বাড়িতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
লেভেরিয়াস ধকর বলেন, “আগে আমাদের জল সংগ্রহ করতে হতো, এখন প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় জল আসে। প্রতিটি পাইপলাইন ঠিকমতো কাজ করছে — এটাই আমাদের বড় সাফল্য।” তাঁর গ্রাম মাইলিয়েম ব্লকের শ্রেষ্ঠ পরিচ্ছন্ন গ্রাম পুরস্কারও পেয়েছে।
প্রথমবার দিল্লি যাচ্ছেন কৃন ধকর। তিনি বলেন, “আগে জঙ্গল থেকে জল আনতে হতো, এখন সব বাড়িতে সংযোগ আছে। শিশুরা আর জল আনতে গিয়ে স্কুল মিস করে না।” এই উন্নয়নের পেছনে সমগ্র গ্রামের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে কৃতিত্ব দেন তিনি।
২০২২ সালে আমিন্ডা রাংসাগ্রে গ্রাম “ওডিএফ প্লাস মডেল ভিলেজ” হিসাবে স্বীকৃতি পায় — গারো পাহাড় অঞ্চলের মাত্র পাঁচটি গ্রাম এই মর্যাদা পেয়েছে। কাসিনো মারাকের নেতৃত্বে গ্রামটিতে ঘরে ঘরে শৌচালয় নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট, কম্পোস্টিং ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। এই ব্যবস্থায় রোগের প্রাদুর্ভাব কমে, পর্যটনের সম্ভাবনা বাড়ে এবং বর্জ্য পদার্থ দিয়েই হস্তশিল্প তৈরি শুরু হয়।
এই উদ্যোগগুলি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং আত্মনির্ভরতা এবং পরিবেশবান্ধব জীবনেরও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। দেশজুড়ে অন্যান্য গ্রামকেও এই অনুপ্রেরণামূলক মডেলের অনুসরণ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

