ভয়াবহ যান দুর্ঘটনা: উদ্ধারের আশায় দীর্ঘ সময় বাঁচার জন্য করুণ আর্জি চালকের, ব্যর্থ দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তর, ক্ষোভ জনমনে

আগরতলা, ৫ আগস্ট: সরকারি কোষাগরের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করলেও আদতে দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তর প্রয়োজন এর সময় কতটা ঢাল তলোয়ারহীন নিধিরাম সরদারে পরিণত হয় তার দৃষ্টান্ত আজ আরও একবার লক্ষ্য করা গেছে তেলিয়ামুড়া থানার অন্তর্গত চাকমাঘাট এলাকাতে। দুর্যোগ মোকাবিলা মহড়ায় তৈরি থাকলেও আসল দুর্যোগে তৈরি ছিল না দপ্তর, ফলে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার অপেক্ষার পর দুর্ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারালো এক যানচালক। তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে ব্যর্থ হল প্রশাসন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধুমাত্র মহকুমা প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ভূমিকার অভাবে এবং দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে একটা দুর্ঘটনাগ্রস্থ গাড়ির চালককে বাঁচানো সম্ভব হয়নি, শত শত মানুষের সামনে সেই গাড়ির চালক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গতকাল রাত্রি আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ চাকমাঘাট এলাকাতে জাতীয় সড়কের উপর ধর্মনগর থেকে আগরতলাগামী সিমেন্ট বোঝাই লরি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। এই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট গাড়ির চালক (তিনি আবার মালিকও) দুর্ঘটনাগ্রস্থ হওয়ার পর গাড়ি থেকে বের হতে পারছিলেন না। এই দুর্ঘটনার ফলে গাড়ির সামনের অংশ চেপে গিয়ে চালকের শরীর আটকে যায়। এই অবস্থাতে কাঞ্চনপুর এলাকার মাখনলাল দেবনাথ এর ছেলে মিহির লাল দেবনাথ বারবার কাতরভাবে বাঁচার চেষ্টা করছিল। বারবার অনুনয় করছিল কোনভাবে তাকে এখান থেকে বার করা হোক।

কিন্তু দুঃখের বিষয় দুর্ঘটনার প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন কিংবা দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তর, অগ্নি নির্বাপক দপ্তরকে সাথে নিয়ে মৃত্যু পথযাত্রী মিহির লাল দেবনাথকে উদ্ধার করতে পারেনি। যদিও দুই থেকে তিনজন দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তরের কর্মী কোনভাবে উপস্থিত হয়েছিল কাটার যন্ত্র নিয়ে, সেটাও ছিল অকেজো।

এলাকার মানুষ সম্মিলিতভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্থ এক গাড়ির চালকের করুন পরিণতি ঘটেছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী দুর্ঘটনা ঘটেছে রাত্রি আড়াইটা নাগাদ, প্রশাসনিক দল ৯:৪০ মিনিট নাগাদ অবশেষে মিহির লাল দেবনাথের নিথর দেহ উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দায়িত্ব খালাস করে।

এই দুর্ঘটনা একদিকে যেমন ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে ঠিক অন্যদিকে আরও একবার প্রমাণ করলো যতই কাগজে-কলমে দুর্ঘটনা মোকাবেলায় দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক না কেন, সঠিক সময়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেন স্থানীয়রা।
তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দাঁড়িয়ে টিএসআর বারো ব্যাটেলিয়ানের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে দাবি স্থানীয়দের।