সিকিমের ৩২,০০০ এরও বেশি কৃষক পেলেন পিএম-কিষাণ প্রকল্পের ২০ তম কিস্তি

গ্যাংটক, ৩ আগস্ট: সিকিমের ৩২,১৯০ এরও বেশি কৃষক পেলেন প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের ২০ তম কিস্তি। এই কিস্তি দেশের কৃষকদের জন্য একটি বড় আর্থিক সহায়তা হিসেবে এসেছে, যার মাধ্যমে কৃষকরা তাদের কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকারের এ ধরনের কৃষকবান্ধব পদক্ষেপ কৃষি খাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, বিশেষ করে সিকিমের মতো সীমান্তবর্তী ও পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকদের জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

পিএম-কিষাণ প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী ৯.৫৩ কোটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০,৫০০ কোটি টাকা স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এতে প্রতিটি কৃষককে বছরে ৬,০০০ টাকা প্রদান করা হয়, যা তিনটি সমান কিস্তিতে (প্রতি কিস্তিতে ২,০০০ টাকা) তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছায়। এই অর্থ কৃষকদের তাদের চাষাবাদে ব্যবহৃত বীজ, সার, সেচ, এবং কৃষিযন্ত্রপাতি কেনার জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রকল্পটি কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক এবং তাদের প্রতি সরকারের সহানুভূতিশীল মনোভাবের প্রতিফলন।

সিকিমে কৃষকদের জন্য এই ২০ তম কিস্তির গুরুত্ব বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। আগের কিস্তির তুলনায় এই কিস্তির উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩২,১৯০ জনে পৌঁছেছে, যা সরকারের বৃদ্ধি পাওয়া কাভারেজ এবং পৌঁছানোর সক্ষমতাকে নির্দেশ করে। সিকিম রাজ্যের সমস্ত ছয়টি জেলার কৃষকরা এই অর্থ সহায়তা গ্রহণ করেছেন, এবং তারা অনলাইনে এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

নমচি জেলার এক কৃষক, যিনি অনলাইনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলেন, তিনি বলেন, “পিএম-কিষাণ প্রকল্প আমাদের জন্য এক জীবনদায়ী সমর্থন। এটি আমাদের চাষাবাদে বিনিয়োগের জন্য আত্মবিশ্বাস প্রদান করে। আমাদের এই অর্থটি কেবল আমাদের বর্তমান কৃষি কার্যক্রমেই নয়, ভবিষ্যতে আমাদের আরও উন্নত কৃষিকাজের জন্যও সহায়ক।”

পিএম-কিষাণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি সুবিধা স্থানান্তরের সুবিধা হল যে এটি মধ্যস্থতাকারীদের দূর করে দেয় এবং সমস্ত প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। এই সরাসরি অর্থ স্থানান্তর কৃষকদের মধ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে, এবং তাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। এই প্রকল্পটি শুধু কৃষকদেরই নয়, দেশের কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।

এছাড়াও, সরকার কৃষকদের জন্য আরও অনেক প্রকল্প চালু করেছে, যেমন পিএম-ফসল বিমা যোজনা যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে, মাটি স্বাস্থ্য কার্ড প্রকল্প যা বৈজ্ঞানিক মাটি পরীক্ষা প্রবর্তন করে আরও ভালো ফলন অর্জন করতে সহায়তা করে, ই-নাম (ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচার মার্কেট) যা ডিজিটাল বাজারের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে, এবং কিষান ক্রেডিট কার্ড যা কৃষকদের সহজ এবং সাশ্রয়ী ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ প্রদান করে।

বিজেপি যুব মোর্চার সিকিম শাখার ইন-চার্জ লালিত পোখরেল শর্মা এই প্রকল্প সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “পিএম-কিষাণ শুধু একটি প্রকল্প নয়; এটি আস্থার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘অন্ত্যোদয়’ ভাবনা, অর্থাৎ ‘শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত পৌঁছানোর’ লক্ষ্য সিকিমের যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার সিকিমের কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটানোর জন্য তাদের সহায়তা করছে।”

এছাড়াও, এই প্রকল্পটি ‘বিকশিত ভারত @2047’ লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে, যেখানে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল করা একটি প্রধান উদ্দেশ্য। সিকিম, যেটি তার জৈব কৃষি কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত, সেখানে এই ধরনের সময়মতো আর্থিক সহায়তা কৃষি ক্ষেত্রে আরও স্থায়ী ও সুশৃঙ্খল উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

পিএম-কিষাণ প্রকল্পের ২০ তম কিস্তি সিকিমের কৃষকদের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এটি সরকারের কৃষকদের প্রতি অবিচলিত সহানুভূতি এবং তাদের উন্নতির জন্য বাস্তব পদক্ষেপের পরিচায়ক। কৃষি খাতের উন্নতির জন্য সরকার অন্যান্য প্রকল্পগুলির মাধ্যমে যে সহায়তা প্রদান করছে, তা দেশের কৃষকদের জীবনযাত্রা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে। পিএম-কিষাণ, কৃষকদের আত্মনির্ভরতা ও মর্যাদাকে আরও উচ্চতর করবে এবং একটি শক্তিশালী গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তুলবে।