গন্ডা, ৩ আগস্ট : রবিবার উত্তরপ্রদেশের গন্ডা জেলার সারেু নদীতে একটি বোলেরো গাড়ি পড়ে গিয়ে ১১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান এবং আরও বেশ কিছু লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গাড়িটি মোট ১৪ জন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল, যারা সিহাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং প্রথা অনুযায়ী প্রার্থনা করতে খারগুফুর প্রিথ্বী নাথ মন্দিরে যাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে গন্ডা জেলার সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ, বিনীত জৈশওয়াল জানান, সিহাগাঁও থেকে খারগুফুর মন্দিরে যাত্রা করার সময় হঠাৎ গাড়িটি সারেু নদীতে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে দ্রুত স্থানীয় পুলিশ স্টেশন এবং গ্রাম প্রধানকে খবর দেন। মুহূর্তের মধ্যে, ইতিয়াথক থানার পুলিশ এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন এবং নদী থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করেন।
আহতদের মধ্যে ৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদেরকে দ্রুত গন্ডা জেলার সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, কিছু লোকের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানা গেছে।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে এই দুর্ঘটনার পর তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
এ বিষয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লেখেন, “গন্ডা জেলার এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানী অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক। নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “আহতদের যথাযথ চিকিৎসা এবং দ্রুত সুস্থতার জন্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।”
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং তিনি কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার এবং চিকিৎসা কার্যক্রমের উপর নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর, গন্ডা জেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। পুলিশ, উদ্ধারকারী দল, এবং স্থানীয়রা যৌথভাবে নদী থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে তৎপর ছিল। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং তারা চিকিৎসাধীন।
এছাড়া, পুলিশ ও প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। তবে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তার শোকবার্তায় লিখেছেন, “এই অদ্ভুত দুর্ঘটনায় প্রাণহানী অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি শোকাভিভূত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তাদের প্রতি আমার সমর্থন এবং সহমর্মিতা রইল।” তিনি আরও বলেন, “প্রার্থনা করি যে, দুর্ঘটনায় নিহতরা শান্তির সঙ্গে পরলোকগত হন এবং তাদের পরিবার এই অগাধ শোকে শক্তি পায়।”
এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা, আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ইতিমধ্যেই দ্রুতগতিতে গ্রহণ করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি, তবে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে, উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
প্রশাসন ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে এবং গন্ডা জেলার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী দিনে বেশ কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোনো চূড়ান্ত মন্তব্য করা হয়নি, তবে কিছু সূত্রের মতে, গাড়িটি খুব দ্রুত চলছিল এবং সড়ক পথের অবস্থা ভালো না থাকার কারণে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। এছাড়া, সড়ক দুর্ঘটনা এবং গাড়ির অবস্থা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ও তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।
তদন্তের পরেই দুর্ঘটনার সঠিক কারণ স্পষ্ট হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

