হাওয়াই, ৩০ জুলাই – রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে আজ বুধবার সকালে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পর, সুনামি ঢেউ হাওয়াইয়ের উপকূলে আঘাত হেনেছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে, যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড সমস্ত হাওয়াই বন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকে পোর্ট থেকে বেরিয়ে উপকূলের বাইরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।
কোস্ট গার্ডের ওশেনিয়া জেলা-এর এক কর্মকর্তা জানান, “হাওয়াইয়ের সমস্ত বন্দরই নতুন জাহাজের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। যেসব জাহাজ হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাছে বা হাওয়াইয়ের বন্দরে আসার পথে আছে, তাদের উপকূলের বাইরে থাকতে হবে যতক্ষণ না পরিস্থিতি শান্ত হয়।”
হাওয়াই রাজ্যের গভর্নর জোশ গ্রিন ঘোষণা করেছেন যে, মাউই থেকে সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং এতে হাওয়াই থেকে যাওয়া ও আসার সব বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘোষণার মাধ্যমে হাওয়াই রাজ্য একটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
এটি ছিল একটি অতিশয় শক্তিশালী ভূমিকম্প, যা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে দ্বারা রেকর্ড করা হয়েছিল এবং এটি ছিল শ্যালো (উঁচু তলদেশের) ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটি প্যাসিফিক অঞ্চলে ব্যাপক সুনামি সতর্কতা সৃষ্টি করেছে। উপকূলীয় এলাকাগুলিতে ১৩ ফুট (৪ মিটার) পর্যন্ত উচ্চতা পাওয়া সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রভাব রাশিয়ার পূর্ব উপকূল থেকে শুরু হয়ে জাপান, হাওয়াই, আলাস্কা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
হানালে-এ সুনামি ঢেউয়ের উচ্চতা ৩ ফুট পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা একটি উপকূলীয় সমুদ্র স্তরের গেজ থেকে রেকর্ড করা হয়েছে। এর ফলে কর্তৃপক্ষ নিম্নভূমি এলাকার বাসিন্দাদের তাত্ক্ষণিকভাবে উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
হাওয়াই অঞ্চলে বর্তমানে অতিরিক্ত ঢেউ এবং বিপজ্জনক প্রবাহ আরও বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে দূরে থাকার এবং সরকারি নির্দেশনা অনুসরণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
স্থানীয়রা এবং পর্যটকরা উপকূলীয় অঞ্চলে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে এবং সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশিত হয়েছেন। সতর্কতা সত্ত্বেও, অতিরিক্ত ঢেউ এবং বিপজ্জনক স্রোত প্রবাহিত হতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক, সমস্ত লোকজনকে উচ্চস্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে এবং সকল নাগরিককে অতি দ্রুত নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে, সুনামি সংক্রান্ত সবশেষ আপডেট এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কাজ করে চলেছে। জনসাধারণকে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি সম্পর্কে জানানো হবে এবং অন্যান্য বিপদজনক পরিস্থিতি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ভূমিকম্প এবং সুনামির কারণে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব আরও বিপজ্জনক হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে এবং সাধারণ জনগণকে ধৈর্যধারণ করতে বলা হয়েছে।
বিশ্বের একাধিক অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে এবং বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে প্যাসিফিক অঞ্চলে এসব বিপদ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, সুনামির পরবর্তী ঢেউ আরও শক্তিশালী হতে পারে, যার ফলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকার বিপদ মোকাবিলায় ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
————–

