নয়াদিল্লি, ৩০ জুলাই : রাজ্যসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনার সময় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও সাংসদ জে.পি. নড্ডা বুধবার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের কড়া সমালোচনা করেন এবং ২০০৪-২০১৪ এবং ২০১৪-২০২৫ সালের সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের মধ্যে “প্রকাশ্য পার্থক্য” তুলে ধরেন। নড্ডার কথায়, ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ভারতের একটি অনিশ্চিত, প্রতিক্রিয়াহীন সরকার ছিল, যারা সন্ত্রাসের জবাবে প্রতিরোধ নয়, ডসিয়ার পাঠাত।
তিনি ওই সময়কালে একের পর এক প্রাণঘাতী হামলার প্রসঙ্গ তোলেন। এই হামলাগুলির মধ্যে ছিল ২০০৫ সালের দিল্লি বিস্ফোরণ, ২০০৬ মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ, ২০০৮ সালের জয়পুর ও আহমেদাবাদ হামলা এবং ২৬/১১ মুম্বাই হামলা। তার দাবি, পাকিস্তান-ভিত্তিক সংগঠন যেমন লস্কর-ই-তইবা, হরকত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামি, ও ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন দায় স্বীকার করলেও ইউপিএ সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে আস্থা গড়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল। বাণিজ্য রুট খোলা, ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো, এবং সংলাপ পুনরায় শুরু করা।
তিনি তুলনামূলক পরিসংখ্যান পেশ করে বলেন, ইউপিএ আমলে (২০০৪–২০১৪) দেশে ৭,২১৭টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই তুলনায় মোদি সরকারের সময় (২০১৫–২০২৫) তা কমে দাঁড়িয়েছে ২,১৫০-তে। সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুও ইউপিএ আমলে ছিল ১,০৬০, যা মোদি জমানায় নেমে এসেছে ৫৪২-এ—প্রায় ৪৯ শতাংশ হ্রাস।
নড্ডা আরও বলেন, ২০১৬-র উরি সার্জিকাল স্ট্রাইক এবং ২০১৯-এর বালাকোট বিমান হামলা ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতিতে ঐতিহাসিক মোড় এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর প্রথমবার আমরা পাকিস্তানের ভিতরে প্রবেশ করে প্রত্যাঘাত করি, বলেন তিনি। সেনা একই, পুলিশ একই, পার্থক্য কেবল রাজনৈতিক সদিচ্ছায়, যোগ করেন নড্ডা।
সম্প্রতি পহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুর ভারতের নতুন কৌশলের প্রতীক। আমরা পাকিস্তানের ভিতরে ৩০০ কিমি পর্যন্ত গিয়ে জইশ, লস্কর, হিজবুলের ঘাঁটি ধ্বংস করেছি এবং একজন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিকও আহত হননি। ইউপিএ-র আমলে সংলাপ ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলত। প্রধানমন্ত্রী মোদির আমলে আমরা স্পষ্ট নীতি নিয়েছি, সন্ত্রাস ও সংলাপ একসঙ্গে চলতে পারে না।
তিনি জানান, এই নীতির বাস্তব রূপ দেখা গেছে পাকিস্তানিদের জন্য সার্ক ভিসা ছাড় স্থগিত, সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা, সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

