গত এক দশকে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে মোদী সরকারের ঐতিহাসিক সাফল্য: রাজ্যসভায় জয়শঙ্করের দাবি

নয়াদিল্লি, ৩০ জুলাই : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানগত পরিবর্তনের স্পষ্ট চিত্র সংসদের উচ্চ কক্ষে তুলে ধরলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। রাজ্যসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, গত এক দশকে মোদী সরকার সন্ত্রাসবাদকে বিশ্ব মঞ্চে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। এটি ভারতের কূটনৈতিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

জয়শঙ্কর বলেন, ইউপিএ আমলে ২০০৬ সালে মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণে ১৮৬ জন, ২০০৭ সালে হায়দরাবাদে ৪৪ জন, ২০০৮ সালে জয়পুরে ৬৪, আহমেদাবাদে ৫৭ জন নিহত হন এবং মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলায় দেশ কেঁপে ওঠে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তখন বিশ্ব দেখেছে ভারতের প্রতিক্রিয়া কী ছিল। পাকিস্তানকে দায়ী করার পরিবর্তে তখনকার সরকার কেবল নিন্দা ও আলোচনার পথ বেছে নিয়েছিল।

জয়শঙ্কর বলেন, উরি হামলার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, পুলওয়ামার পর বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক এবং বর্তমানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এসবই প্রমাণ করে যে ভারত এখন সক্রিয়ভাবে জবাব দিচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গত দশকে ভারত ব্রিকস, এসসিও, কোয়াড এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলির মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ঐক্যমত গড়ে তুলেছে। আজ গোটা বিশ্ব ভারতের চেষ্টাতেই সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাসুদ আজহার ও আব্দুল রেহমান মাক্কি-র মতো কুখ্যাত জঙ্গিদের জাতিসংঘে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে ২৬/১১ হামলার স্থল তাজ হোটেলে সন্ত্রাসবিরোধী বৈঠক করে আমরা বিশ্বকে কড়া বার্তা দিয়েছি। ২৬/১১ হামলায় অভিযুক্ত তহাওওর হুসেন রানা-কে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

জয়শঙ্কর জানান, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণকারী দল তাদের প্রতিবেদনে প্রথমবার টিআরএফ-এর নাম উল্লেখ করেছে এবং লস্কর-ই-তৈবা-র সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেছে। পহেলগাম হামলার জন্য টিআরএফ দায়ী, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, এই প্রথম ব্রিকস সম্মিলিত বিবৃতিতে কোনো নির্দিষ্ট সন্ত্রাসী হামলার (পহেলগাম) উল্লেখ করে তা নিন্দা করা হয়েছে। এটি ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য।