গৌরব গগৈ ‘পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাজ করেন’, লোকসভায় ভাষণ ঘিরে বিঁধলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী

গুয়াহাটি, ২৯ জুলাই : লোকসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনায় কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈর বক্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে গগৈর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শর্মা বলেন, কংগ্রেসের ওই সাংসদ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাজ করেন।

তিনি লেখেন, লোকসভায় যোরহাটের কংগ্রেস সাংসদের (গৌরব গগৈ) গতকালের বক্তব্যই প্রমাণ করে যে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাজ করেন। তাঁর গোপন পাকিস্তান সফর এবং পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অনেক কিছু বলে দেয়। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের বিদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে, ফলে তিনি যে কোনও সময় ভারত ছেড়ে চলে যেতে পারেন। তিনি অসমের জন্য লজ্জা এবং ভারতীয় গর্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

গতকাল সোমবার লোকসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে গৌরব গগৈ কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল হওয়া জঙ্গি হামলায় (যেখানে ২৬ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হন) কেন্দ্র গোপনীয়তা বজায় রেখেছে এবং তথ্য প্রকাশ করেনি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভারতের গোয়েন্দা ব্যবস্থাপনা, পেগাসাস, স্যাটেলাইট, সিআরপিএফ, বিএসএফ, সিআইএসএফ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে ৫ জন ভারী অস্ত্রধারী জঙ্গি অনুপ্রবেশ করে এতবড় হত্যাকাণ্ড ঘটাল এবং এখনও ১০০ দিন পরেও কোনও উত্তর নেই? গগৈ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই ঘটনার “নৈতিক দায়িত্ব” নেওয়ার দাবি জানান এবং অভিযোগ করেন, সরকার নিরাপত্তা ব্যর্থতা স্বীকার না করে কেবল দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।

এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অভিযোগ করেন, গগৈ ও তাঁর পরিবারের পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। তিনি দাবি করেন, আমার কাছে এমন নথি রয়েছে যা প্রমাণ করে, গৌরব গগৈর স্ত্রী আন্তর্জাতিক জলবায়ু লবির হয়ে ভারত সরকারের গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করতেন।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গগৈ পাকিস্তান সফর করেছিলেন সংসদ সদস্য হওয়ার আগেই, যখন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বসবাস করতেন। একজন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে কীভাবে এমন সফরে যান? এটি অত্যন্ত সন্দেহজনক, মন্তব্য করেন শর্মা। সাথে তিনি আরও দাবি করেন, গগৈ ২০২১ সালে নিজের সন্তানের নাগরিকত্ব পরিবর্তনের আবেদন করেছিলেন। তা প্রমাণ করে তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর তিনি গগৈর বিরুদ্ধে প্রমাণসহ এমন তথ্য প্রকাশ করবেন যা কংগ্রেসকে লজ্জায় ফেলবে। তিনি বলেন, আমি যা প্রকাশ করব, তা দেখে রাহুল গান্ধী আফসোস করবেন, কেন গৌরব গগৈকে নেতৃত্বে বসানো হয়েছে।

তিনি কংগ্রেসকে পাকিস্তানপন্থী দল আখ্যা দিয়ে বলেন, রাহুল গান্ধীকে এখন উত্তর দিতে হবে। কংগ্রেস বরাবরই পাকিস্তানকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে, আর গগৈকে নেতৃত্বে বসিয়ে তারা সেটা আবার প্রমাণ করেছে। এখন গগৈ বা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের পাল্টা প্রতিক্রিয়া না এলেও রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে।