ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৮ জন কাওরিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু, প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ

রাঁচি, ২৯ জুলাই : ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলার জামুনিয়া গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ১৮ জন কাওরিয়া। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। মঙ্গলবার সকালে শ্ৰাবণী মেলার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার ভক্ত বাবা বৈদ্যনাথ ধামে জল অর্পণ করতে রওনা হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

দেওঘরের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্স-এ ঘটনাটির বিষয়ে নিশ্চিত করে লেখেন, আমার লোকসভা কেন্দ্র দেওঘরে শ্রাবণ মাসে কাঁভার যাত্রার সময় বাস ও ট্রাক দুর্ঘটনায় ১৮ জন ভক্ত প্রাণ হারিয়েছেন। বাবা বৈদ্যনাথ যেন তাঁদের পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দেন। দুর্ঘটনাস্থল মোহনপুর ব্লকের অন্তর্গত জামুনিয়া নদীর তীরে অবস্থিত, যা একটি জনপ্রিয় শিব-পার্বতী মন্দিরের কাছাকাছি এলাকায় পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, একটি বাসে প্রায় ৩৫ জন ‘জল’ নিবেদন করতে কাওরিয়া দেওঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই ট্রাক সজোরে ধাক্কা মারে বাসটিকে। সংঘর্ষ এতটাই তীব্র ছিল যে বাসটি কার্যত দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়।

বেশ কয়েকজন ভক্ত বাসের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েন। সাথে সাথে স্থানীয় পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে নামে। আহতদের নিকটবর্তী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দেওঘর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দুর্ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা পৌঁছান। পরে তারা আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গেছে, দুর্ঘটনার পেছনে চালকদের গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার কাজের জন্য একটি ক্রেনও মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাই। ঈশ্বর যেন তাঁদের এই দুঃখ সইবার শক্তি দেন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।

ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, আজ সকালে মোহনপুর ব্লকের জামুনিয়া চকে একটি বাস দুর্ঘটনায় বহু ভক্তের মৃত্যুর সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জেলা প্রশাসন তৎপরভাবে উদ্ধার ও চিকিৎসা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাবা বৈদ্যনাথ যেন নিহত ভক্তদের আত্মাকে শান্তি দেন এবং শোকাহত পরিবারগুলিকে এই কঠিন সময়ে সহ্য করার শক্তি প্রদান করেন।

এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় নিরন্তর কাজ করে চলেছে।