নয়াদিল্লি, ২৮ জুলাই : বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে আরও স্পষ্ট করে জানাল, উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ব্যাপক অন্তর্ভুক্তি, গণহারে বাদ যাওয়া নয়। আদালত সোমবার আদেশ দেয়, অধিকাংশ নাগরিকের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে আধার ও ভোটার ফটো আইডি কার্ডকে সনাক্তকরণপত্র হিসেবে এসআইআর-এ গ্রহণ করতে হবে।
বিশদ বিবরণে বিচারপতি সুর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যে কোনো নথিই জাল হতে পারে। সম্ভবত হাজারে একটি ভোটার কার্ড খাঁটি নাও হতে পারে, তবে নির্দিষ্টভাবে সেগুলি দেখা যেতে পারে। এই যুক্তিতে কোনো নথিকেই একেবারে বাতিল করা যায় না।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আধার ও ভোটার কার্ড সহজেই জাল হতে পারে এবং আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, বরং পরিচয়ের দলিল মাত্র। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, যে কোনো রাষ্ট্রীয় নথিতে অনুমানযোগ্য স্বচ্ছতা রয়েছে এবং এগুলো যাচাইও করা সম্ভব। এক্ষেত্রে গণহারে ভোটার দেওয়ার বদলে বদলে ব্যাপক অন্তর্ভুক্তির পথে হাঁটুন।
ড্রাফট ভোটার তালিকা প্রকাশের তিন দিন আগে নির্বাচন কমিশন আদালতের এই পরামর্শ মানতে নারাজ ছিল। তবুও আদালত জানিয়েছে, আধার ও ভোটার কার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আবেদনকারীদের অন্তর্ভুক্তির দাবি বিচার করুন।
বিচারপতি বাগচী স্পষ্ট করেন, তালিকাভুক্ত ১১টি সনাক্তকরণপত্রের কোনোটাই কোনও চূড়ান্ত নয়। সুতরাং, আধার দেখালেও আবেদনকারীকে যাচাই করা যেতেই পারে। আদালত বিচার-বিবেচনা করে জানিয়েছে, এখনই ড্রাফট তালিকা প্রকাশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। কারণ আবেদনকারীরা অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেননি। চূড়ান্ত শুনানির নির্ঘণ্ট আগামীকাল নির্ধারণ হবে।
আইনজীবী গোপাল শংকরণারায়ণ আদালতকে জানান, ১ আগস্ট ড্রাফট তালিকা প্রকাশ হলে প্রায় ৪.৫ কোটি মানুষের ভোটার অধিকার সংকটে পড়তে পারে। তখন তাদের নিজ দায়িত্বে দাবি-আপত্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের হলফনামা অনুযায়ী, চলতি বছরে বিহারের ভোটার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা ফর্ম জমা দিলেই ড্রাফট রোলে থাকবেন—নথি থাক বা না থাক। ড্রাফটের পর আরও ৩১ দিনের দাবি-আপত্তির সুযোগ থাকবে (১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। ২০০৩ সালের এসআইআর-এ থাকা ভোটারদের জন্য আলাদা সুবিধা—তাদের আলাদা করে নথি দিতে হবে না, শুধু আংশিক পূর্ণ ফর্ম ও পুরনো ভোটার তালিকা জমা দিলেই চলবে। আদালতের মন্তব্য, ভোটার তালিকা সংশোধনে কোনো বিভ্রান্তি অথবা গণহারে ভোটার বাদ যাওয়ার আশঙ্কা ভিত্তিহীন। তবুও চূড়ান্ত শুনানির আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ আদালতের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।

