শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সমন জারির স্থগিতাদেশ বাড়ল, সাভারকর প্রসঙ্গে সতর্কবার্তা

নয়াদিল্লি, ২৫ জুলাই: বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে লখনউয়ের নিম্ন আদালতে জারি হওয়া সমনের স্থগিতাদেশ আরও চার সপ্তাহের জন্য বাড়িয়ে দিল। সাভারকর সম্পর্কে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি মনমোহন-এর ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে জানায়, বাদীপক্ষের তরফে পাল্টা হলফনামা দাখিলের জন্য আরও সময় চাওয়ায় এই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল। আদালত অভিযোগকারীর উদ্দেশ্যে দুই সপ্তাহ সময় নির্ধারণ করেছে পাল্টা হলফনামা দাখিলের জন্য।
এর আগে এপ্রিল মাসে, আদালত রাহুল গান্ধীকে অন্তর্বর্তীকালীন স্বস্তি দিয়েছিল ঠিকই, তবে কড়া হুঁশিয়ারিও জারি করেছিল। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত তখন রাহুলকে ইতিহাসের পাঠ দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেন যে, তাঁর ঠাকুমা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও বিনায়ক দমোদর সাভারকারের প্রশংসা করেছিলেন।
বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, “আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে কোনও কুৎসিত মন্তব্য বরদাস্ত করব না। আজ যদি কেউ বলে মহাত্মা গান্ধী ছিলেন ব্রিটিশদের দাস, তা হলে?” এই মন্তব্যের মাধ্যমে বেঞ্চ রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শও দিয়েছে।
বিচারপতিরা বলেন, “সাভারকার মহারাষ্ট্রে পূজিত হন। এ ধরনের মন্তব্য করলে ভবিষ্যতে গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হতে হতে পারে।”
উত্তরপ্রদেশ সরকার তাদের দাখিল করা হলফনামায় রাহুল গান্ধীর আবেদনের বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সমন জারি করেছেন এবং পুলিশ তদন্তের রিপোর্ট (ধারা ২০২ সিআরপিসি) এর ভিত্তিতে মামলাটি গঠনযোগ্য বিবেচনা করেছেন।
সরকারি হলফনামায় আরও দাবি করা হয়েছে, “রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রার সময় সাভারকারকে ‘ব্রিটিশ পেনশনভোগী’ এবং ‘ব্রিটিশের দাস’ বলে বর্ণনা করেছেন। এই মন্তব্য জনসাধারণের মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।”
এখন দেখার, চার সপ্তাহ পর মামলাটি কী মোড় নেয় এবং আদালত কী চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।